মিয়ানমার, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন:বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন করেছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত-করণ, দূতালয়ে নবনির্মিত শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, ইয়াঙ্গুনের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে আলোচনা সভা ও সেমিনারের আয়োজন। দ্বিতীয় পর্বে আয়োজন করা হয় একটি বর্ণাঢ্য বহুজাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে ১২ দেশের ১৬টি ভাষাভাষী মানুষের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পরিবেশনার মাধ্যমে তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোঃ মনোয়ার হোসেন দূতালয়ে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি রচিত হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত হোসেন ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা এবং বহুভাষিকতার প্রচারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি ও তাৎপর্য উল্লেখ করেন। ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটি অব ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেসের সাথে যৌথভাবে আয়োজিত ‘মাতৃভাষার গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর Daw Wai Hnin, প্রফেসর Yin Myo Tint, Dr. Win Ming Aung এবং অ্যাকশন-এইড, মিয়ানমার-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শিহাব উদ্দিন আহমেদ আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। আলোচকরা মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং সমসাময়িক সমাজে তাদের সংরক্ষণ ও প্রচারের কৌশল তুলে ধরেন। দিবসটির অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ ছিল বর্ণাঢ্য বহুজাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেখানে ভারত, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, রিপাবলিক অব কোরিয়া, লাও পিডিআর, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, নিউজিল্যান্ড, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা তাঁদের নিজ নিজ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে। অনুষ্ঠানে ৩০টি দেশের রাষ্ট্রদূত, অন্যান্য কূটনীতিক, মিয়ানমারে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুই শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।