ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: মেক্সিকোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস প্রথমবারের মত গুয়াদালাহারা আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশগ্রহণ করছে যা লাতিন আমেরিকার সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা।এই বইমেলার ৩৭তম সংস্করণে সম্মানিত অতিথি হলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। উক্ত বইমেলায় বাংলাদেশ স্টলটিতে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী এবং জাতি গঠনে তাঁর ভূমিকা, রাজনৈতিক আন্দোলন, আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন, সাহিত্য আর সংস্কৃতি সম্বলিত মোট ৬৪ টি বই প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়াও স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত বঙ্গবন্ধু “অসমাপ্ত আত্মজীবনী”, “পিপলস’স হিরো, সাহিত্যিক আনিসুল হকের “মা”, “স্প্যানিশ ভাষায় শত কবিতা” এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবির প্রকাশনা “নজরুলের কবিতা” এই বইমেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম অত্যন্ত আনন্দের সাথে গুয়াদালাহারা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ২৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশের প্রথম স্টলের উদ্বোধন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বইমেলায় আগতদের বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার পাশাপাশি লাতিন আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের সাহিত্যিক সেতুবন্ধন স্থাপনে এবং পারস্পরিক আদান-প্রদান বৃদ্ধিতে এই স্টলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রতিবছর এই বইমেলায় বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক অংশগ্রহণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বাংলাদেশের প্রকাশকদের এই বইমেলায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেন। উক্ত স্টলটি উদ্বোধনের পরপরই বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির উপরে দূতাবাস কর্তৃক প্রকাশিত “বিউটিফুল বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি সচিত্র প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য লেখক আনিসুজ জামান (মেক্সিকোতে বসবাসরত), কবি ও লেখক মৌ মধুমন্তি (কানাডা হতে আগত), কবি শেলী জামান খান (আমেরিকা হতে আগত), গুয়াদালাহারায় বাংলাদেশের অনারারী-কনসাল (মনোনীত) কার্লোস অল্সটেইন, কলম্বিয়ার বিখ্যাত লেখক ও অনুবাদক আন্দ্রেজ মুনোস, এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর শাহনাজ রানু। পরবর্তিতে রাষ্ট্রদূত ইসলাম আনিসুজ জামান কর্তৃক অনুদিত এবং আন্দ্রেজ মুনোস কর্তৃক সম্পাদিত ছোট গল্পের সংকলন “Cuentos a Orillas Del Río Padma” (পদ্মা নদীর গল্প) বইটিরও মোড়ক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশের স্টলে দর্শনার্থীরা স্প্যানিশ প্রকাশনা, বিশেষ করে ‘দ্য পিপলস হিরো’, “স্প্যানিশ ভাষায় শত কবিতা” এবং ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা বাংলাদেশের হস্তশিল্প যথা ঐতিহ্যবাহী পুতুল এবং গ্রামাঞ্চলের দৈনন্দিন জীবনকে সুস্পষ্টভাবে চিত্রিত করে সূচিকৃত নকশী কাঁথা ক্রয়ের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। ২০২৩ সালের গুয়াদালাহারা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ১২ শতাধিকেরও অধিক স্টল এবং প্রায় ৫০ টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী ২৫০০ প্রকাশক অংশগ্রহণ করেছে যেখানে প্রায় ১০,০০০ সাহিত্যানুরাগী দর্শনার্থী প্রতিদিন পরিদর্শন করছে। এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উভয় দেশের শিল্প, সংস্কৃতি এবং সাহিত্য বিনিময়কে উৎসাহিত করবার পাশাপাশি একটি সাংস্কৃতিক কূটনীতিকেও আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।