ইসলামাবাদ, পাকিস্তান, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও জাঁকজমক-ভাবে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে উদযাপন করেছে। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ এবং শিশু-কিশোররা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে দূতালয় প্রাঙ্গণ বর্ণাঢ্য ব্যানার, পোস্টার, রঙিন ফুল ও বেলুনে সুসজ্জিত করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ রুহুল আলম সিদ্দিকী দূতালয় প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা করেন। আলোচনা পর্বের শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় হাইকমিশনার তাঁর বক্তব্যে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু শৈশব থেকেই ছিলেন নির্ভীক, দয়ালু এবং পরোপকারী কিন্তু অধিকার আদায়ে ছিলেন আপসহীন। তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপস করেননি। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালি জাতিরই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বের সকল নিপীড়িত-শোষিত মানুষের অধিকার ও মুক্তির অগ্রনায়ক। হাইকমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের টানে ১৯৬৩ সালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে ‘কচিকাঁচার মেলা’ আয়োজিত শিশু আনন্দ মেলায় গিয়েছিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে মিশে মনটা একটু হালকা করার জন্য এলাম’। ছোট্ট এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শিশুদের প্রতি তাঁর আন্তরিক ভালোবাসা চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছিল। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ ঘোষণা করে। হাইকমিশনার আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যতে দেশ গড়ার কাজে তারাই নেতৃত্ব দেবে। একটি শিক্ষিত জাতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন এবং ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে শিশুদের গড়ে তুলতে সরকার ইতোমধ্যে আইটি নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনসহ শ্রেণীকক্ষসমূহে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ বিষয়ে রচনা এবং ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বিষয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মাঝে উল্লেখযোগ্য ছিল ভিন্ন ভাষাভাষী নয়জন শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে বাংলা, উর্দু ও ইংরেজিতে ‘পাঠচক্র’। পাঠচক্র শেষে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর নির্মিত একটি ভিডিও-চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এবং পাঠচক্রে অংশগ্রহণকারীসহ সকল শিশু-কিশোরদের মাঝে আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে শিশুদের পছন্দের খাবার সহযোগে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।