নিউইয়র্ক, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস চলমান বৈশ্বিক সংঘাতসহ আর্থিক, জ্বালানি ও খাদ্য সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি এ কথা জানান। গুতেরেস জানান, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসে সারের কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে যা বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে। বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় জানান। বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারন উন্নয়নের গতিধারার প্রশংসা করেন মহাসচিব। বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনে আরো সাফল্য অর্জন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের ধারাবাহিক নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন তিনি। তাঁরা সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের ওপর গৃহীত রেজ্যুলেশনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকট ও এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন এবং এই সংকট সমাধানে আসিয়ানের কার্যকর নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই প্রেক্ষিতে মহাসচিব ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। মহাসচিবের সাথে সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরেসি (Csaba Kőrösi), ডিপার্টমেন্ট অফ পিসবিল্ডিং অ্যান্ড পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স (ডিপিপিএ)-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো (Rosemary DiCarlo) এবং পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁপিয়েরে ল্যাক্রুয়ার (Jean-Pierre Lacroix) সাথেও বৈঠক করেন। সাধারণ পরিষদের সভাপতির সাথে বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃক একটি মন্ত্রী পর্যায়ের নতুন ফোরাম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। উপরোক্ত উদ্যোগের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অসাধারণ নেতৃত্ব, কার্যকর সম্পৃক্ততা এবং উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।