ম্যানচেস্টার, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন, ম্যানচেস্টারে যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস এবং বাংলাদেশের মহান বিজয়-এর গৌরবোজ্জ্বল ৫১ বছর-পূর্তি উদযাপন করা হয়। ভিন্নধর্মী আয়োজনে বাঙ্গালী জাতির স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে প্রথমবারের মতো আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ঐতিহাসিক ম্যানচেস্টার সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে আয়োজিত ২ (দুই) দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে রাজকীয় প্রতিনিধি, যুক্তরাজ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, মেয়র, জনপ্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সম্মানিত ব্রিটিশ-বাংলাদেশী নাগরিকগণ ও কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তি-বর্গসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন। ২ (দুই) দিনব্যাপী মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানকে মূলত তিনটি পর্বে সাজানো হয়েছিল, প্রথম পর্বে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে চ্যান্সারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, এক মিনিট নীরবতা পালন, বাণী পাঠ এবং মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্যের উপর বিশেষ আলোচনা সভা। ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে বিজয় দিবসের প্রধান অনুষ্ঠানটি ম্যানচেস্টারস্থ সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে ‘Bangabandhu & Golden Bengal: Realising Dream into Reality’ শিরোনামে ০২(দুই) দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই প্রদর্শনীর মূল উপপাদ্য ছিল বিবর্তনের বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’র চাক্ষুষ প্রতিচ্ছবি। ল্যাঙ্কাশায়ারে ব্রিটিশ রাজার প্রতিনিধি লর্ড লেফটেন্যান্ট মিসেস ডিয়ানে হাউকিনস জে.পি. এল.এল.বি. এবং সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান যৌথভাবে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এছাড়া ল্যাঙ্কাশায়ারে রাজার হাই-শেরিফ লরেন সি ওয়ারসলে কার্টার, এমবিই, ডিএল সহ ম্যানচেস্টারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, অনেক শহরের মেয়র, কনসাল জেনারেলসহ অংশগ্রহণকারী কূটনীতিকবৃন্দ বিজয়ের ৫১-তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সহকারী হাই-কমিশনের এই আয়োজনে ব্রিটিশ মূলধারার প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিগণ, যথা, লর্ড লেফটেন্যান্ট, লর্ড মেয়র, মেয়র, সংসদ সদস্য, ম্যানচেস্টারস্থ বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেল, পুলিশের প্রধান সুপারসহ বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীর স্বতঃস্ফূর্ত ও অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ হয়েছে। বিদেশী অতিথিবৃন্দ ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশী নাগরিকগণ মহান বিজয় দিবস নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ম্যানচেস্টারস্থ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা মহান বিজয় দিবস এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের প্রশংসা করেন। সহকারী হাই-কমিশনার কাজী জিয়াউল হাসান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়, বিশ্ব-মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, জনগণের জীবন মান বৃদ্ধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আজ অত্যন্ত সম্মানের। বিশ্ব-দরবারে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন যে, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট মোকাবেলায় শান্তির স্বপক্ষের দেশ এবং নিজস্ব সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের জনগণ কখনো পরমুখাপেক্ষী ছিল না এবং বাঙালী জাতি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যের হস্তক্ষেপ বরদাশত করে না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা সমৃদ্ধশালী, প্রগতিশীল উদার এবং শান্তিকামী বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে যার সুফল সমগ্র দেশ ইতোমধ্যে ভোগ করতে শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে সকাল ৯.০০ ঘটিকা থেকে বিকাল ৫.০০ ঘটিকা পর্যন্ত দিনব্যাপী ম্যানচেস্টারস্থ সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী এই আয়োজনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশী নাগরিক ছাড়াও বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা আলোকচিত্র প্রদর্শনী উপভোগ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।