All Menu

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ১১ জুন বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি হাইওয়ে পুলিশের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল আত্মত্যাগ ও বীরত্বের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা গড়ে তুলেছিল প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক বীর পুলিশ সদস্যদেরকে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আওয়ামী লীগ সরকার যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ পুলিশের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা পুলিশের বাজেট বৃদ্ধি, ঝুঁকিভাতা চালু, রেশন প্রাপ্তির হার দ্বিগুণ এবং প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্হা করি। ১৯৯৮ সালে আমরাই প্রথম পুলিশ সুপার পদে একজন নারী কমকর্তাকে নিয়োগ দেই। ৫ কোটি টাকা সিড মানি দিয়ে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন, পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা, পুলিশের জনবল বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আমরা পুলিশের ব্যাপক উন্নয়নমূলক র্কাযক্রম বাস্তবায়ন করেছি। পদমর্যাদা বৃদ্ধি, নতুন পদ সৃষ্টি এবং বিভিন্ন স্তরে বিপুল সংখ্যক পদোন্নতি প্রদানসহ গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) , শিল্প পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এন্টি টেরোরিজম, কাউন্টার টেরোরিজম, নৌ পুলিশ, এমআরটি পুলিশ ও এসপিবিএনসহ অনেকগুলো নতুন বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পাবর্ত্য জেলাগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় কয়েকটি ব্যাটেলিয়ন গঠন করা হয়েছে। আমরা পুলিশ স্টাফ কলেজকে আন্তর্জাতিকমানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করেছি। আমরা থানা, ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ দিয়েছি। দশ তলা ভবন করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতালকে আধুনিকায়ন করেছি। আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। পুলিশ বাহিনীর জন্য ডিএনএ ল্যাব, ফরেনসিক ল্যাব অটোমেটেড ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এফআইএস) ও আধুনিক রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করেছি। আকাশপথে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পুলিশের এয়ায় উইং গঠন করা হয়েছে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ জনগণের আস্হা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের এসকল সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে পুলিশ বাহিনী আজ একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ, গতিশীল ও জনবান্ধব বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
আমরা হাইওয়ে পুলিশকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে ৫০টি হাইওয়ে আউটপোস্ট নির্মাণ করেছি। হ্যালো এইচপি অ্যাপস ও হাইওয়েতে ডিউটিরত পুলিশ অফিসারদের বডিঅর্ন ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক সার্বক্ষনিক নজরদারীর লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড হতে চট্রগ্রাম সিটি গেইট পযর্ন্ত ২৫০ কিলোমিটার এলাকায় অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সহকারে সিসিটিভি মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে হাইওয়ে পুলিশের কাজে অধিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত যানবাহন ও জনবল বৃদ্ধির পরিকল্পনা আমাদের সরকারের রয়েছে।
সকল সময়ে জনগণের সেবা করাই প্রতিটি পুলিশ সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। হাইওয়ে পুলিশ জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনসাধারণের নিরাপত্তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে আসছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছেন । আমার প্রত্যাশা, মানবীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে সততা, নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ত্যাগ, বীরত্ব ও দেশপ্রেমের সাথে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যগণ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে হাইওয়ে পুলিশকেও হতে হবে আধুনিক, যুগোপযোগী ও স্মার্ট ।
আমি হাইওয়ে পুলিশের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top