All Menu

জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বুধবার ৫ জুন ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ আয়োজনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে ধরণীকে বাসযোগ্য রাখার অন্যতম উপাদান হলো বৃক্ষ। মানুষ তার মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বৃক্ষরাজির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। প্রাণিকুলের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন উৎপাদন ছাড়াও পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ নিশ্চিতে বৃক্ষের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে সবুজ-শ্যামল অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত বাংলাদেশের বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। অবাধে বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে; বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন বৃদ্ধির অন্যতম কারণও হলো পরিবেশ দূষণ। ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন সীমিত রাখতে বৃক্ষরোপণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্যামল বাংলার এই অপরূপ প্রকৃতি রক্ষায় ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে একটি সুষম সবুজ আচ্ছাদন গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪ এর প্রতিপাদ্য-‘বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুজলা, সুফলা, চিরসবুজ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার দেশের বনজ সম্পদের উন্নয়ন, বন সংরক্ষণ ও বৃক্ষাচ্ছাদন বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে বিদ্যমান বন সংরক্ষণের পাশাপাশি বন সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিলুপ্ত বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে সরকারি বনভূমি ও প্রান্তিকভূমিতে সামাজিক বনায়ন, সরকারি বনভূমিতে সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষিত এলাকায় সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া, বন ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধনে সকল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ও বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। বনভূমি সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য এসকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবৈধভাবে বৃক্ষ নিধন প্রতিরোধ ও এই বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর অবদান রাখতে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই।
বৃক্ষরোপন অভিযান বাস্তবায়নে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যারা বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার, ২০২২ ও ২০২৩ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও গবেষণায় অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন, ২০২৩ ও ২০২৪ পেয়েছেন আমি তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি আশা করি, তাদের এ অর্জন অন্যদেরকেও বনায়ন ও বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসতে উৎসাহ যোগাবে। অধিকহারে গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও নির্মল পরিবেশ গড়ে তুলতে আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই।
‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ সফল হোক-এ কামনা করি।
জয় বাংলা।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top