All Menu

নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ৪ জুন ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“নিরাপদ নৌচলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৪’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি নৌ-খাতের সম্মানিত নৌযান মালিক, শ্রমিক, নাবিক ও যাত্রীবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য-‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও যথোপযুক্ত হয়েছে বলে আমি মনে করি।
আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশের গণমানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম নদী ও নৌযান। নৌপথের সংরক্ষণ কেবল পরিবেশ নয়, দেশের অর্থনৈতিক বিকাশেরও পরিপূরক। দেশের নৌযোগাযোগ ব্যবস্থায় গতিশীলতা বৃদ্ধি তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে সমুন্নত রাখতে নৌপথের সার্বিক পরিচর্যা, দূষণ, দখল ও নদীভরাট রোধ, নৌযানের সঠিক মাননিয়ন্ত্রণ, যাত্রী ও নৌযান মালিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নদীপথের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। আওয়ামী লীগ সরকার নৌচলাচল নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত করতে নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আধুনিক নৌযান তৈরি ও তাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন করাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি নদীপথ দূষণমুক্ত রাখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের বিষয়টিও আমাদের সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করে চলেছে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী ভাবনায় স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ‘দি টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স এন্ড মেরিটাইম জোন্‌স অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ প্রণীত হয়। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বঙ্গোপসাগরে রাষ্ট্রীয় সীমানা বর্ধিত করতে সক্ষম হয়েছি। যার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশিতে উন্মোচিত হয়েছে সুবিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার এক নতুন স্বর্ণদ্বার। আমার বিশ্বাস, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলে এ সম্ভাবনার সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ বর্তমানে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। বিশ্ব আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। গত ১৫ বছরে আমরা স্বাস্থ্যসেবা, রাস্তাঘাট, সেতু, নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথসহ বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধন করেছি। পাশাপাশি আমরা নতুন নদীবন্দর স্থাপনসহ সকল নদীবন্দরকে আধুনিকীকরণ, নদীবন্দরের ঐতিহ্য, নৌপথের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, পটুয়াখালী জেলায় তৃতীয় সমুদ্র বন্দর স্থাপন, উপকূলীয় দুর্গম পথে যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থা চালুকরণ, কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপন, স্থল বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নসহ আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
নৌযোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে উপমহাদেশে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। দেশের অর্থনীতির বিকাশে আন্তর্জাতিক পরিবহণ নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার বিষয়টিও বর্তমান সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। নৌ দুর্ঘটনা হ্রাসে নদীবন্দরসমূহে নিরাপত্তা জোরদার, ত্রুটিপূর্ণ নৌযান শনাক্তকরণ, নাবিকদের প্রশিক্ষণ আধুনিকীকরণ, নৌ-নিরাপত্তা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম ও আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণসহ নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে নৌযান ও নৌযানে যাত্রী সাধারণের চলাচল আরো নিরাপদ হয়েছে।
আমি আশা করি, নিরাপদ নৌচলাচল নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা আরো তৎপর হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি স্মার্ট নিরাপদ নৌব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।
আমি ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top