ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমি এ বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। মানুষের জানমাল রক্ষা করার উদ্দেশ্যে, জনস্বার্থে এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে বিভিন্ন অপারেশনে অবদান রাখতে গিয়ে যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন বা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাঁদের আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার সাথে স্মরণ করি। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সেই সাথে জঙ্গিবাদ, অগ্নি-সন্ত্রাস, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক, জলদস্যু-বনদস্যু, চরমপন্থি, ডাকাতি, কিশোর গ্যাং, ভেজাল, জালমুদ্রা, সাইবার ক্রাইম, নারী-শিশু পাচার/নির্যাতন এমনকি রমজান মাসে মুনাফালোভীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন। নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন-ঝড়, বন্যা ও ভূমিধ্বস এবং মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ-দুর্বিপাক এমনকি করোনা মহামারিকালেও এ বাহিনী ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি মনে করি র্যাব এ সকল ভূমিকার জন্য গণমানুষের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় দুই দশক ধরে চলমান সংঘাতের অবসান করেছি। সে সময় প্রায় ১ হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আমার হাতে অস্ত্রসমর্পণ করেছিল এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৬৪ হাজার রিফিউজি ফিরিয়ে এনে তাদের সকলকে পুনর্বাসন করেছি। দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে দেশটাকে জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। তারা প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল করেছে, ৬৩টি জেলায় একসাথে বোমা হামলা করেছে, আওয়ামী লীগের জঙ্গিবাদ বিরোধী সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা এবং পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে বোমা হামলা করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। নারী, শিশু, সংখ্যালঘু, ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিদেশী কূটনীতিক সকলের ওপর আক্রমণ করেছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিল তাদের প্রধান টার্গেট। এসব কারণে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছি। ২০১৮ সালে সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছি। এক্ষেত্রে র্যাবের সাথে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্থানীয় জনগণ সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর র্যাবকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর করেছে। আমরা এ বাহিনীকে ১৫টি ব্যাটালিয়ন সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত একটি অত্যন্ত চৌকষ বাহিনীতে পরিণত করেছি। দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা এবং বীরত্বপূর্ণ ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য র্যাব প্রতিবছর পুলিশ পদক পেয়ে আসছে। তাছাড়া র্যাব মহাপরিচালক পদক প্রণয়ণের ফলে এ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা র্যাবের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছি। অপরাধীদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে র্যাব ‘নবদিগন্তের পথে’ শীর্ষক একটি কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে।
আমি বিশ্বাস করি, ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’-এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে ভবিষ্যতেও এ বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বশীল, কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।