ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এখন উৎপাদন ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছে। রপ্তানি বৃদ্ধি ও আমদানি প্রক্রিয়া টেকসই করার কাজ চলছে। বাংলাদেশ হতে কৃষিপণ্য রপ্তানির সামগ্রিক প্রক্রিয়া এখনও সুসংগঠিত নয়। সেজন্য আমরা গোটা ট্রেড ইনফরমেশন সিস্টেমটাকে সাজিয়ে রপ্তানিকারকদের জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলছি। কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা কামনা করছি। সচিব আরও বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক এসআরও ১২৯ এর আওতায় বিদ্যমান সুবিধার অতিরিক্ত আরো ৪০টি আইটেমে শুল্ক সুবিধা প্রয়োজন। বিশেষ করে কৃষি যন্ত্রপাতি, প্যাক হাউজ তৈরির যন্ত্রপাতি, কৃষিপণ্যের প্যাকিং ম্যাটেরিয়ালস, ল্যাবরেটরি যন্ত্রপাতি, কুল চেইন প্রতিষ্ঠা সংশ্লিষ্ট মেশিনারিজ ও যানবাহন ইত্যাদির শুল্ক কর ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা, কৃষি উপকরণ ছাড়করণের ক্ষেত্রে বন্ড সুবিধা প্রদান এবং পণ্য রি-এক্সপোর্ট এর সুবিধা প্রদান বিষয়ে রাজস্ব বোর্ডের সহযোগিতা প্রয়োজন। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নিকট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা সনদ গ্রহণ করেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। এ সময় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার গ্রহণ করে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের এ অর্জন দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং স্বয়ংক্রিয়করণসহ এ খাতে সংস্কার সাধনের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্য সহজীকরণ; এবং তেল, পেঁয়াজ ও কৃষি যন্ত্রপাতির আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার অনন্য স্বীকৃতি। এর মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয় যে সম্মান অর্জন করছে তা আগামী দিনগুলোতে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রেখে একটি কার্যকর উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক মানের বিপণন ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তুলতে আমাদের উৎসাহিত করবে। নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের কৃষিখাতে অর্জিত অভাবনীয় সাফল্য তুলে ধরে সচিব বলেন, উৎপাদনযোগ্য জমি ক্রমহ্রাস পেলেও কৃষিতে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রয়োগ ও উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষাবাদের কারণে এবং কৃষকের শ্রমে কৃষিতে এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আর এর ফলে বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন আমরা দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত শাক-সবজি ও ফল বিদেশে রপ্তানি করছি। বিগত কয়েক বছরে কৃষিপণ্য রপ্তানির চিত্র হতে দেখা যায় যে, করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষাপটেও আমরা প্রতি বছরই কম-বেশি প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি কৃষকদের প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে ডাল ও তৈল জাতীয় ফসল এবং পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছি, যা একদিকে আমাদের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখছে অন্যদিকে এসকল পণ্যের সাপ্লাই ক্রাইসিস ব্যবস্থাপনা সহজতর করেছে। এদিন ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের সার্টিফিকেট অভ্ মেরিট সম্মাননা পেয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।