All Menu

ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“নরসিংদী জেলার ঘোড়াশালে স্থাপিত ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬-১৯৫৭ সালে তৎকালীন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও গ্রাম সহায়তা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকাকালীন সর্বপ্রথম এ অঞ্চলে শিল্প প্রসারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে শিল্পায়নের গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি ১৯৫৭ সালে ইস্ট পাকিস্তান স্মল এন্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ (ইপসিক) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করে ৫৯৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করেন। ১৯৭৩ সালে Industrial Investment Policy, ১৯৭৪ সালে New Industrial Investment Policy এবং ১৯৭৫ সালে Revised Investment Policy প্রণয়ন করেন। পাশাপাশি ১৯৭৩ সালে শ্রমিকদের জন্য একটি মজুরি কমিশন গঠন করেন। স্বাধীনতার পরে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে শ্রমঘন শিল্পায়নের ধারা বেগবান করে টেকসই ও সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরেই বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশব্যাপী শিল্পখাতের কার্যকর বিকাশে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব ও পরিকল্পিত শিল্পায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আমরা জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ প্রণয়ন করেছি। পাশাপাশি খাতভিত্তিক পৃথক নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সরকারের গৃহীত শিল্পনীতি ও কর্মসূচির ফলে দেশে টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পখাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিকাশের জন্য আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। ফলে দারিদ্র্যবিমোচন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক অগ্রগতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশ থেকে এগিয়ে আছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। দেশের মোট জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সারা বিশ্বে চলমান শিল্প বিপ্লবের ধারা শিল্প উৎপাদনে ব্যাপক প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এনেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক টেকনোলজির ব্যবহার শিল্প উৎপাদনের ধারা পাল্টে দিয়েছে এবং পূর্বের তুলনায় উৎপাদনশীলতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের শিল্প-কারখানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা তৈরি হয়েছে। এ ধারা এগিয়ে নিতে আমাদের সরকার সম্ভব সব ধরনের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশের শিল্পখাত উজ্জীবিত হচ্ছে এবং জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের ধারা বেগবান হচ্ছে। ২০১৪ সালে ঘোড়াশাল এবং পলাশে ২টি পুরাতন ইউরিয়া সার কারখানার স্থলে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, শক্তি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব নতুন সার কারখানা ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করি। বাস্তবায়িত ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার উৎপাদিত সার দ্বারা দেশীয় সারের চাহিদা পূরণ হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমি আশা করি। বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই গ্রানুলার সার কারখানা নির্মাণে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য আমি জাপান ও চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শিল্পায়নের চলমান এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে- এ আমার প্রত্যাশা।
আমি ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top