All Menu

সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ এবং জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী-এর ৯৫তম জন্মজয়ন্তীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের মহান স্বাধীনতার ইতিহাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাঙালির পক্ষে কূটনৈতিক যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তানি দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায় তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করেন। এ সময় দূতাবাসে কর্মরত বাঙালিদের জীবন রক্ষায় হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বন্দী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর মুক্তির জন্য জোরালো আহ্বান জানান। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। তাঁর বিচক্ষণতায় ৪০টি দেশ স্বল্প সময়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। তাছাড়া, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কালরাতে জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী আমাকে এবং আমার বোন শেখ রেহানাকে বেলজিয়াম থেকে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে আনার ব্যবস্থা করেন। আমাদের চরম দুঃসময়ে তিনি এবং তাঁর সহধর্মিণী মেহজাবিন চৌধুরী পরম মমতায় আমাদের দুই বোনকে আগলে রাখেন। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী দিল্লীতে আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। অকুতোভয় এই কূটনীতিবিদকে সে জন্য ষড়যন্ত্রকারীদের রোষানলে পড়তে হয় এবং তিনি বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হন। দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে স্পিকারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। জাতীয় সংসদকে গতিশীল এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনার মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। জাতীয় সংসদের প্রচলিত রীতিনীতির আধুনিকায়ন এবং সংস্কারে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। আমার প্রত্যাশা, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী-এর অবদান জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে তাঁর দেশপ্রেমের মহান আদর্শ এবং আত্মত্যাগের মহিমা ছড়িয়ে দিবেন।
আমি সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী-এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top