ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার ১০ ডিসেম্বর ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে দেশব্যাপী ‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি দেশের আপামর জনসাধারণ, ব্যবসায়ী এবং ভ্যাট আহরণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজস্বকর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূণ্য হাতে একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন, যখন ব্যাংকে একটি টাকাও ছিল না এবং রিজার্ভ ছিল না। স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি শিল্প-প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা জাতীয়করণের মাধ্যমে সেখানে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। ‘৭০-এর নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী তিনি শিল্প-ভিত্তিক অর্থনীতির বিকাশ এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) গ্রহণ করেন। তিনি অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৭২ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ৭৬ নং অধ্যাদেশ জারীর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। ভ্যাট দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্বের অন্যতম প্রধান উৎস। রাজস্ব আয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই সরকার উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সেবা প্রদানের ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। এই অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর একটি মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ প্রণয়ন করি এবং ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন শুরু করি। এই আইনকে অধিকতর কার্যকরকরণ এবং অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করি। ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ লাখের অধিক করদাতা নতুন ১৩ ডিজিটের নিবন্ধন অনলাইনে গ্রহণ করেছে এবং ৭৩ শতাংশ দাখিলপত্র অনলাইনে হচ্ছে। ই-পেমেন্টে অর্থ বিভাগের অটোমেটেড চালান ব্যবহার করে ১২টি তফশিলি ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে এবং ৪৬টি তফশিলি ব্যাংকের মাধ্যমে অফলাইনে সরকারী কোষাগারে রাজস্ব প্রদানের ব্যবস্থা করেছি। কাস্টমস্ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য আমরা ওয়েব ভিত্তিক ASYCUDA World System চালু করেছি। আমাদের সরকারের গৃহীত যুগোপযোগী নীতি ও ব্যবস্থাপনার ফলে করদাতাগণ যেমন কর পরিপালনে আগ্রহী হচ্ছেন, তেমনি দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিলাম, রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের মাহেন্দ্রক্ষণে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লক্ষ্যমাত্রা ১৭.২ বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমরা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি, একটি সমৃদ্ধ রাজস্ব ভান্ডার গড়ে তোলার উপর প্রাধান্য দিচ্ছি। তাছাড়া, প্রয়োজনীয় পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ, যুগোপযোগী ও জনবান্ধব রাজস্ব প্রশাসন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমি জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সকলকে সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাই ।
আমি ‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২২’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক ।”
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।