All Menu

সাইবার নিরাপত্তা আইন অবশ্যই বাতিল করা উচিত

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমাদের অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই আমরা যাব। তবে এই মুহুর্তে পুরো আইন বাতিল করা হবে, না কি কেবল স্পিচ অফেন্স বাতিল করা হবে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। কিন্তু আলটিমেটলি এটা বাতিল হবে। বৃহস্পতিবার (০৩অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ সংশোধন বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগের বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, পরবর্তীকালে যখন নতুন আইন করা হবে, তখন তার মৌলিক একটি অনুচ্ছেদে নাগরিকদের সাইবার সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে অবশ্যই নারী ও শিশুদের স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে তাদের বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। সেজন্য এরকম সেমিনার অব্যাহত রাখা হবে। সভার শুরুতে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী উপস্থাপন করা হয়। এতে অনেকেই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন আইন করার পরামর্শ দেন। ড. আসিফ নজরুল বলেন, ইতোমধ্যেই সাইবার নিরাপত্তা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নাগরিক পরিসরে একটি ধারণা আছে আইন মন্ত্রণালয় বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলেই সব মামলা প্রত্যাহার করে দিতে পারে। এটা সত্যি না। একটি মামলা বিভিন্ন পর্যায় বা স্তরে থাকে। সব মামলা ইচ্ছে করলেই প্রত্যাহার করা যায় না। মামলা প্রত্যাহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যে মামলার কনভিকশন হয়ে যায়, সেখানে যিনি কনভিকটেড (দোষী সাব্যস্ত) হয়েছেন ওনার আবেদন ছাড়া মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের মামলাগুলো কেন প্রত্যাহার করা হচ্ছে না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, মামলায় যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়ে যায়, যত ভুয়া মামলাই হোক, চাইলেই তা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। এজন্য একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল ধরণের কালা-কানুন থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা হবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি যা পরে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পরিণত করা হয়েছে, মূলত অপ্রয়োগের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এর প্রতি মানুষের একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এই আইনকে যতভাবেই সংশোধন করা হয় না কেনো, এর প্রতি মানুষের অনাস্থা থেকে যাবে। তাই সংযোজন-বিয়োজন করে নতুনভাবেই আইনটি করা উচিত। আলোচনা সভায় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম রব্বানী, বিশিষ্ট আলোকচিত্রশিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির, ইংরেজি দৈনিক দ্য ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্যতম ভিকটিম খাদিজাতুল কোবরা প্রমুখ অংশ নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top