যে আপনার দুঃসময়ে পাশে থাকে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। কৃতজ্ঞতার সরল প্রকাশ বিনয়ে। আপনিও অন্যকারো অসময়ে ভরসা দিয়েন। যে আপনাকে কোনো না কোনোভাবে সাহায্য করেছে আপনিও তাঁর সাহায্যের প্রতিদান দিতে পারেন। কিন্তু ঋণ কী শোধ করতে পারেন? ধরুন, বিপদের দিনে কেউ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে এবং বিপদ কেটে যেতে আপনি টাকা ফিরিয়ে দিলেন! যারা আপনার দুর্দিনে এগিয়ে এসেছিল আবার যারা দুর্দিন দেখে হেসেছিল- এই দুইধরনের মানুষকে কখনোই এক পাল্লায় মাপতে পারবেন না। মনে রাখবেন, ধার-দেনা শোধ করা যায় কিন্তু ঋণ কখনোই শোধ হয় না। ঋণ- শোধ করার অতিরিক্ত কিছু।
ভালো ভালো কাজ করে, সুপরামর্শ দিয়ে মানুষকে, সময়কে চিরঋণী করে রাখুন। ঋণের প্রচ্ছন্ন উপকারিতা আছে। আপনার প্রতি অন্যের ঋণ আপনাকে ঢাল হয়ে সহায়তা করে। দুর্দিনের আপনাকে ভরসা দেওয়া মানুষগুলো, অভাবে অর্থ দিয়ে সাহায্য করা মানুষগুলোর উপকার শোধ করার পরেও তাদের ঋণ অস্বীকার করার মত বোকামি করবেন না। যে আপনার বিপদ দেখেও সঙ্গ ছাড়েনি, যে বুক চিতিয়ে আপনাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছে তাকে ভুলে গেলে গোস্তাখি হবে। এই আত্মনাশ করবেন না। বরং যে আপনাকে সরিষা পরিমান উপকার করেছিল আপনিও তাকে নজরে নজরে রাখুন- কখন তার উপকারে আসতে পারবেন। সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ুন।
যার থেকে উপকৃত হয়েছেন এবং যেসব ভালোকাজ দ্বারা লাভবান হয়েছেন সেগুলো সেই ব্যক্তিকেই কেবল ফিরিয়ে দিবেন কিংবা কেবল অনুরূপ কাজই করবেন- এই আশায় অলস বসে থাকবেন না। যখনই সুযোগ আসে কারো কোন উপকার করার তখনই সে সুযোগ কাজে লাগান। কারো উপকার করার সুযোগ বারবার আসে না। যখন সুযোগ পাবেন নিজের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিবেন। আপনার দু’টো ভালো কথা, একটি সৎপরামর্শ কিংবা কোন ভালোকাজে সুপারিশ করে দেওয়াতে কারো ভাগ্যের আমূল বদল হয়ে যেতে পারে। এই একটা জীবন ভালো কাজে ব্যয় হলে, অপরের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করলে আপনার জীবন ধন্য হয়ে উঠবে। হাত বাড়িয়ে নেওয়ার চেয়ে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে অধিক সম্মান নিহিত থাকে।
আপনার কোন ভালোকাজ কিংবা কথার কারনে আপনার অগোচরে কোন মানুষ আপনার প্রশংসা করে, কেউ আপনাকে স্মরণ করে শ্রদ্ধাবনত হয় কিংবা আপনার মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করে- নিশ্চিত জানুন, এই ছোট জীবনে এরচেয়ে বড় কোন প্রাপ্তি না। যারা কেবল সম্পদের সঞ্চয় দ্বারা নিজেদের যোগ্যতা মাপে তাদের হিসাবে কোথাও ভুল হচ্ছে। সম্পদের নয়, হিসাব হবে কর্মের! প্রভূ দানশীলতা পছন্দ করেন। সম্পদ থাকার পরেও যারা সাদকাতে কৃপণতা দেখায়, যারা প্রতিবেশী কিংবা গরীবের হক আদায় করে না তাদের সম্পদ তাদের ধ্বংসের যাত্রায় সহায়ক হবে। সামর্থ্য থাকার পরেও সে সম্পদ অন্যদের বিপদের সময় উপকার করতে না পারলে সম্পদ তার মালিককে অভিশাপ দিতে শুরু করে। অথচ যারা অর্থ দিয়ে মানুষের কষ্ট লাঘব করে দেয় তাদের বন্টিত/দানকৃত অর্থ তাদেরকে বালামুসিবত থেকে রক্ষা করবে। দানের মত প্রশান্তি ভোগে থাকে না।
যে উপকার করেনি কিংবা উপকার পেয়েও অস্বীকার করেছ, সেও যদি আবার দ্বারস্থ হয় তবে সামর্থ্য থাকলে ফেরানো উচিত নয়। দুঃসময়ে যে ফিরেও তাকায়নি তার বিপদের সময় পাই পাই হিসাব নেওয়াও কঠোরতা। মানুষের দিল কখনোই এমন কঠোর না হোক। মানুষের উপকার করলে সেটা উপকৃত ভুলে যেতে পারে, অস্বীকার করতে পারে কিন্তু যিনি বিনিময় প্রদানের সর্বশ্রেষ্ঠ হকদার তিনি হিসেবে গড়মিল করেন না। কারো উপকার করলে জীবদ্দশাতেই সেটা ভিন্নভাবে পুরস্কার হিসেবে জীবনে ফিরবে। চেষ্টা না করেও না কিছু পেয়ো যাবেন। খোদা সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করেন অকৃতজ্ঞকে। কাজেই সাবধান! কারো থেকে সামান্যতম উপকৃত হয়েও যেনো আমরা সেটা কখনোই বিস্মরণ না হই। সুসময়ের উল্টোপিঠে দুঃসময়টা লেপ্টে থাকে। উপকারের ঋণ কখনোই অর্থ দিয়ে পরিশোধযোগ্য নয়। ঋণের দায় সৎকাজের দ্বারাই মেটাতে হয়।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
[email protected]
প্রধান বার্তা সম্পাদক ও চেয়ারম্যান: মো. আতিকুর রহমান
ভাইস-চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর: তানভীর আমের হোসেন (নুমান)
প্রধান সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মো. রফিকুল ইসলাম
রিপোর্টিং ও প্রধান কার্যালয়: নাহার ম্যানশন (সি-৯), ১৫০ মতিঝিল সি/এ, ঢাকা – ১০০০। বাংলাদেশ।
ফোন: +88 09611-378696 , ইমেইল: [email protected]
© ২০২৪ ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত