কেউ প্রয়োজনের সময় আপনাকে খোঁজে আর বাকি সময় ভুলে থাকে- এটা আপনাকে রাগান্বিত না করে বরং গর্বিত করা উচিত। শতেক সহস্র মানুষের মধ্য থেকে কারো প্রয়োজনের সময় আপনাকে কারো মনে পড়ে, প্রয়োজন হয় কিংবা ভরসা করে দায়িত্ব দেয়- এটা একাধারে আপনার যোগ্যতা এবং সৌভাগ্য। যার প্রয়োজন তার নানাবিধ সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে কিংবা অকৃতজ্ঞও হতে পারে কিন্তু যাকে প্রয়োজন সে সাধারণ কেউ নন। অসাধারণরাই অন্যের ভরসা হতে পারে। যোগ্যতার পরিমণ্ডলে অবস্থানের সৃষ্টি হওয়া কম সম্মানের কথা নয়।
তবে কেউ কোথাও একমাত্র অপরিহার্য নয়। বিকল্পের অন্ত নাই। কেউ ডাকলে ইগো দেখালে, কেউ ঠেকলে মুখ ফিরিয়ে নিলে কিংবা কেউ আসলে তাকে ফিরিয়ে দিলেও তাদের কেউ ঠেকে থাকবে না। প্রয়োজন পুরা হয়ে যাবে শুধু আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা-বোধ জন্মানোর সুযোগ দিলেন না। কারো প্রয়োজনের সময়ে প্রিয়জন হওয়ার সুযোগ হারালেন। যাকে আজ স্বার্থপর মনে হয়েছে সে সারাজীবনে বদলাবে না- এইটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আপনার দ্বারস্থকে পাঁচকথা শুনিয়ে তার মন থেকে আরও দূরে সরে গেলেন।
যারা কেবল প্রয়োজনের সময়ে ডাকে তাদের পাশে বেশি করে দাঁড়ান। তারা অকৃতজ্ঞ হতে পারে কিন্তু আপনি তো আপনার মূল্য ও মূল্যায়ন বুঝবেন। কারো উপকার করলে তাতে ক্ষতি হয় না বরং লাভের পাল্লা ভারী হয়। কোথাও কারো উপকারে আসার, সহায়তা করার সুযোগ পেলে সেটাতে স্ব প্রণোদিত অংশগ্রহণ করা উচিত। ক্ষতি যে কেউ করতে পারে, ব্যথা অনেকেই দিতে পারে। উপকার করতে পারে ক’জন? কারো উপকার করলে তখন কৃতজ্ঞতা-বোধের অদৃশ্য জাল তৈরি হয়।
কারো বিপদে আপনাকে পাশে পেলে সে ঋণে আটকায়। এই ছোট্ট জীবনে যত অধিক মানুষকে ঋণী করতে পারেন- সেই প্রয়াস প্রবল হোক। ঋণের প্রচ্ছন্ন উপকারিতা আছে। একজন উপকারভোগি যতবার আপনাকে স্মরণ করবে ততবার তা মন আপনার জন্য সম্মান দেখাবে, অজ্ঞাতে আপনার প্রশংসা করবে এবং আপনার মঙ্গল প্রার্থনা করবে। মানবজীবনের অর্থ-সম্পদের প্রাপ্তি হিসাবনিকাশ করা যায় কিন্তু আত্মতৃপ্তির এই অর্জন অতুলনীয়। আপনি কারো উদ্ধার-উপকারের টুল- এটা ভাবতেই হৃদয়ের প্রশান্তি প্রকট হওয়ার কথা।
কারো উপকার করতে অর্থ লাগে না বরং সুন্দর মন লাগে। আর লাগে সদিচ্ছা। যে কাজ করেন সেখানেও মানুষকে আরেকটু আন্তরিকতা দেখিয়ে, ভালো আচরণ করে এবং সেবা নিশ্চিত করে মানুষের উপকার করতে পারেন। যারা আপনায় ভরসা করে, যারা করে বিশ্বাস তাদের আস্থা রক্ষার জন্য প্রয়োজনে আত্মত্যাগ করতে হবে। যারা কেবল প্রয়োজনের সময়ে আপনাকে খোঁজে আপনিও সেই সময়টুকুতে ভালোবেসে সাড়া দিন। সামর্থ্যের মধ্যে থাকলে একজনকেও ফিরিয়ে দিয়েন না। যদি কোন প্রতিশোধ নিতেই হয় তা লোকের সুখের সময় নিয়েন। কারো দুঃখের সময়ে তাদের দুঃখটাকে আর বাড়াবেন না।
যদি কাউকে অবজ্ঞা করেন তবে দিনের পালাবদল ঘটবে। যারা আজ আপনার দ্বারে আপনাকেও তাদের দ্বারস্থ হওয়া লাগতে পারে। কাজেই সেদিন যাতে লজ্জিত হতে না হয়। সময়কে সবসময় নিজের অনুকূলে রাখুন। উপকার করলে সেটা বিনিময়-হীন যায় না। যার উপকার করেছেন সে অস্বীকার করতে পারে কিন্তু আপনার উপকৃত হওয়ার ক্ষেত্র এক-দুই নয় বরং বহু। যে পালক আপনি অবারিত করবেন সেই পালকের সমৃদ্ধি আপনার অঙ্গেও লাগবে। বন্ধু-শত্রু নির্বিশেষে চোখ বুঁজে উপকার করে যান। আঘাত পেলেও ভালোবাসায় প্রতিঘাত দিন। আপনাকে জেতানোর জন্য অন্য কেউ আছেন। আপনাকে পুরস্কার তিনিই দেবেন। মানুষের থেকে সবকিছুর বিনিময় আশা না করাই ভালো।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
[email protected]
প্রধান বার্তা সম্পাদক ও চেয়ারম্যান: মো. আতিকুর রহমান
ভাইস-চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর: তানভীর আমের হোসেন (নুমান)
প্রধান সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মো. রফিকুল ইসলাম
রিপোর্টিং ও প্রধান কার্যালয়: নাহার ম্যানশন (সি-৯), ১৫০ মতিঝিল সি/এ, ঢাকা – ১০০০। বাংলাদেশ।
ফোন: +88 09611-378696 , ইমেইল: [email protected]
© ২০২৪ ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত