কারো সন্তানের শরীরের রঙ কালো, মোটা কিংবা খাটো- এসব বলার আগে হাজার-খানেক বার ভাববেন। এসব না বলার জন্য যত সময় নিয়ে চিন্তা করার দরকার হয় তত সময় চিন্তায় ডুবে থাকবেন। তারপরেও এসব বলবেন না। আপনি আত্মীয় কিংবা স্বজন হিসেবে আত্মীয়কে দু’এক কথা অজ্ঞতাতে শোনাতে পারেন, তাতে সম্পর্কের কবর নাও হতে পারে কিন্তু আপনি তাদের সন্তানের সম্পর্কে এমন কিছু নিয়ে মন্তব্য করবেন না যা মা-বাবাকে সীমাহীন দুঃখ দেয়। এটাও করতে পারেন তবে আর সম্পর্কে বন্ধুত্ব থাকবে না বরং শত্রুতার শীর্ষে থাকবেন।
মানুষ হিসেবে রূচিবান হতে হয়। মা-বাবার কাছে তাদের সন্তান জগতের সবচেয়ে সুন্দরতম অবয়বে থাকে। সেখানে আপনার আপত্তিকর মন্তব্যে তাদের মন চরমভাবে খারাপ করে দিতে পারে এবং আপনার বক্তব্য আপনাকে অমানুষ ঠাহর করাতে পারে। কাজেই মন্তব্য করার আগে বিবেক সক্রিয় করবেন এবং তারপরেই কিছু বলবেন। কারো সন্তানের দায় নিশ্চয়ই আপনাকে নিতে হবে না। পারলে কারো জন্য দরদ ধরবেন নয়তো চুপ থাকবেন। তবুও দু’এক কথা বলেই আহাম্মক সাজবেন না।
প্রত্যেক মানুষ সুন্দরতম সুরতে জন্ম গ্রহণ করে। শিশুকে কালো-সাদায় বিভাজন করা আপনার বোধের রোগ এবং চোখের ব্যাধি। কাউকে আঘাত করে সুখ পেলে সে পচন আপনার অন্তরাত্মার সৌন্দর্যকে জিম্মি করেছে। অথচ শিশু দেখলেই আপনার মধ্যে আদর-স্নেহ জাগ্রত হওয়া উচিত ছিল। তা না করে শিশুদের সম্পর্কে অহেতুক কথা বলা, তাদের মা-বাবার মনে বেদনা জাগানোয় আপনার তৃপ্তি জাগলে মানসিক ডাক্তারে শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। সমাজে আপনার থাকা মানেই সমাজে আরও টক্সিন ছড়ানো।
শিশুরা স্রষ্টার সবচেয়ে সুন্দরতম সৃষ্টি। তাদের আচরণ নিয়ে বাবা-মায়ের সাথে পজিটিভ আলাপ করা যায় কিন্তু তাদের বর্ণ, কর্ণ এবং আকৃতি নিয়ে আপত্তিকর শব্দ উচ্চারণে নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত। সন্তানের ব্যাপারে বাজে মন্তব্য একজন মা অথবা বাবার মাঝে কী যে মনো-যন্ত্রণার উদ্রেক করতে পারে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। আপনার শিক্ষা ও রুচির কাছে আপত্তিকর নয় এমন কথাও সমাজে বিভেদ বাড়াতে পারে, সম্পর্কে চিড় ধরাতে পারে এবং বাবা-মায়ের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে। যার সম্পর্কে মন্তব্য করছেন সে যদি বুঝতে শেখার বয়সে থাকে তবে সবচেয়ে ক্ষতি তারই হয়। তখন শিশুর মানসিক বিকাশ ও বিস্তার চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়।
যার রূপ-চেহারা, আকৃতি-বিন্যাস জীবনের কোন অংশে আপনাকে উপকার কিংবা ক্ষতি করবে না। মোটকথা, কোনভাবেই আপনার ওপর কোন প্রভাব ফেলবে না সে সম্পর্কে আপনার বাজে মন্তব্য করার দরকার কী? আপনার কথাতেই আপনার জাত চেনায়। যে কথা, যে মন্তব্য আপনাকে মহৎ বানায় সে সব শুধুই বলুন। মানুষের সাথে শত্রুতা না বাড়িয়ে বরং আপন হতে চেষ্টা করুন। শিশুদের আদর-স্নেহ করা ধর্মীয় আদেশ। একটু উন্নত মস্তিষ্কের হলে নিশ্চয়ই আপনার কথায় সৌন্দর্য ও সুগন্ধি থাকবে। পৃথিবীর সবকিছু নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্য করলেও সেখানে শিশুদের রাখবেন না। শিশুরা এই আলোকের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। আপনি সেই আলোকের একফোঁটা গ্রহণ করুন তবেই মানুষ হয়ে উঠবেন।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
[email protected]
প্রধান বার্তা সম্পাদক ও চেয়ারম্যান: মো. আতিকুর রহমান
ভাইস-চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর: তানভীর আমের হোসেন (নুমান)
প্রধান সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মো. রফিকুল ইসলাম
রিপোর্টিং ও প্রধান কার্যালয়: নাহার ম্যানশন (সি-৯), ১৫০ মতিঝিল সি/এ, ঢাকা – ১০০০। বাংলাদেশ।
ফোন: +88 09611-378696 , ইমেইল: [email protected]
© ২০২৪ ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত