ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিশ্বের মুক্তিকামী, নিপীড়িত, শ্রমজীবী ও দুঃখী মানুষের প্রাণের নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর চিন্তা ও দর্শন মানুষের মধ্যে প্রেরণা জুগিয়েছে । নিপীড়িত, নির্যাতিত শোষিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী সংগ্ৰামী মানুষ বিশ্বের যে প্রান্তেই হোক না কেন, তিনি তাদের সঙ্গে একাত্ম ছিলেন। জেল, জুলুম, অত্যাচারসহ অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনো থেমে যাননি, আপস করেননি। বৃহস্পতিবার (৩০ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অভ্ ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘Bangabandhu: A Champion of World Peace’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, শোষণ-বঞ্চনায় বিপন্ন মানুষ বরাবরই বঙ্গবন্ধুর চিন্তা জুড়ে ছিল। তবে তার সেই চিন্তা শুধু দেশের গণ্ডিতেই নয়, বরং তা বিস্তৃত ছিল বিশ্বজুড়ে। বিশ্বরাজনীতি প্রসঙ্গে অসীম সাহসী ও অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তি যে অর্থ ব্যয় করে মানুষ মারার অস্ত্র তৈরি করছে, সেই অর্থ গরিব দেশগুলোকে সাহায্য দিলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে।’ তিনি বলেন, শোষিত ও নিপীড়িত জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তথা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক পান, স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক অর্জন। তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর মৌলিক দর্শন ও অবদানের মূল্যায়ন ছিল এই পদক। জুলিও কুরি পদকপ্রাপ্তি ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সাল থেকে প্রতি দু’বছর পর পর সম্মানজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ড গঠন ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন- এইসব ক্ষেত্রগুলো পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে। বিআইআইএসএস’র চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত আ ফ ম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, বিশ্বশান্তি পরিষদ বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু, বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ আবু বকর সিদ্দিক খান, বিআইআইএসএস-এর জেষ্ঠ্য গবেষক এম আশিক রহমান এবং বীর প্রতীক সাজ্জাদ আলী জহির বক্তৃতা করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।