ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান। বুধবার (২৪ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ এর মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ইলিশ যেমন আমাদের গৌরবের জায়গা, তেমনি ইলিশ জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও একটা বড় ক্ষেত্র। তাই এটিকে লালন-পালন, পরিচর্যা এবং বিভিন্ন গবেষণাধর্মী পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এটিকে আরো বেশি উৎপাদন বাড়ানো এবং এটিকে সত্যিকার অর্থে একটি বড় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেই এগোতে হবে। মৎস্য মন্ত্রী বলেন, দেশে ইলিশের অভায়শ্রম কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সে জায়গাগুলো থেকে উত্তরণ করা দরকার। ইলিশের বিচরণ পথ সুগম ও নিরাপদ করতে হবে। তা না হলে ইলিশের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রকৃত মৎস্যজীবীদের একটা সুনির্দিষ্ট তালিকা করা জরুরি। এছাড়া মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনকে দায়িত্ব নিয়ে সুষ্ঠুভাবে তা পালনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। জাটকা নিধন বন্ধ করতে হবে এবং কেউ অবৈধ জাল ব্যবহার করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর পাশাপাশি অভয়াশ্রম সম্পৃক্ত এলাকার জেলে ও মৎস্যজীবীদের নিয়ে সামাজিক ক্যাম্পেইন করতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মানুষের মৌলিক বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধান কাজ। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয় ইদানীং বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে বা আছে তাদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে এবং এ অসাধু ব্যবসায়ী যারা কারসাজি করে মূল্য বৃদ্ধি করে মানুষকে কষ্ট দিতে চায় তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার। মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবদুল কাইয়ূম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান মাসুদ আরা মমি। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ জুলফিকার আলী এবং নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শফিকুল ইসলাম। পরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ এর প্রতিবেদন শীর্ষক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। উল্লেখ্য, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১২ অক্টোবর হতে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান, ২০২৩ বাস্তবায়ন করা হয়। এ সময় দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ৩৮ জেলার ১৭৪ উপজেলায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান, ২০২৩ বাস্তবায়ন-কালে জেলে ও মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৭টি জেলে পরিবারকে ২২ দিনে ২৫ কেজি হারে মোট ১৩ হাজার ৮৭২ মেট্রিক টন ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।