স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, বিগত বছরগুলোতে নদীর আশপাশের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের নামে গরিবের ঘর-বাড়ি ভাঙা হয়েছে৷
অথচ এসব ঘর-বাড়ির পাশেই রয়েছে বিশাল ভবন। তিনি আরো বলেন, উচ্ছেদের নামে যেসব এলাকার ঘর-বাড়ি ভাঙা হয়েছে, রাজধানীর অধিকাংশ গৃহপরিচারিকারা এসব ঘর-বাড়িতে থাকেন। এভাবে উচ্ছেদ করা ঠিক নয়।
উপদেষ্টা বুধবার (০৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) ঢাকার পানি ভবনে ‘ব্লু নেটওয়ার্ক এরাউন্ড ঢাকা সিটি’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। হাসান আরিফ বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞগণকে সমন্বয় করে কমিটি গঠন করেছি৷ আমাদের প্রথম কাজ হবে তাঁদের পরামর্শের ভিত্তিতে সমস্যা চিহ্নিত করা। তারপর সমাধানের পথ খুঁজে বের করা৷ আমরা জানি, রাস্তা নির্মাণে সঠিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হয়নি।
আমাদের সমন্বিতভাবে এখন একশন প্ল্যান শুরু করতে হবে৷ বিশেষজ্ঞমহল থেকে যে প্রস্তাবনা আসছে তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। আদিলুর রহমান জানান, ঢাকা শহরে খাল-বিল, নদী-নালা বন্ধ হতে হতে এমন অবস্থায় এসেছে যা আমরা কখনো প্রত্যশা করিনি। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে হবে৷ অবৈধ দখলদারদের থেকে যদি নদী-নালা উদ্ধার করতে না পারি তাহলে জুলাই-আগস্ট মাসে অভ্যুত্থানের ফলাফল জনগণ দেখতে পাবে না। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে যা করার দরকার তা করা হবে। সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যদি ঢাকার খাল ও নদী নিয়ে না ভাবি তাহলে ঢাকাকে বাঁচাতে পারব না। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ঢাকার প্রত্যেকটা খালের বাস্তব চিত্র খুঁজে বের করতে হবে। ঢাকার নদী ও খালগুলোকে রক্ষা করতে আমাদের তাৎক্ষণিক, মধ্যমেয়াদী ও ৩ বছরের রোডম্যাপ এবং সমন্বিত একশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। রাজধানীতে বর্তমান প্রজন্ম কোনো পরিষ্কার খাল দেখেনি। তিনি তাঁর বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি কর্পোরেশন-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যুক্ত করে দ্রুত ঢাকার খাল ও নদী দখলমুক্ত করার কর্মসূচি গ্রহণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি ঢাকার খালগুলো দূষণ এবং দখলমুক্ত করার প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার তাগিদ দেন। সেমিনারে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।