All Menu

শান্তি সম্প্রীতি ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের দর্শন হতে পারে মুক্তির পাথেয়

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ধর্মমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, মানুষের কল্যাণ এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধ আজীবন অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের দর্শন হতে পারে আমাদের মুক্তির পাথেয়। বুধবার (২২ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) শুভ বুদ্ধ পুর্ণিমা ও আন্তর্জাতিক ভেসাক ডে ২০২৪ উপলক্ষ্যে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ধর্মমন্ত্রী বলেন, বুদ্ধ পূর্ণিমা মহামতি গৌতম বুদ্ধের আর্বিভাব, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণের স্মৃতিবিজড়িত পূণ্যময় একটি দিন। মহামতি বুদ্ধ পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে গেছেন। তিনি লোভ, বিদ্বেষ ও লালসাকে অতিক্রম করে তাঁর জীবন ও কর্মের মাধ্যমে মানবজগৎকে আলোকিত করেছেন। পৃথিবীতে আজ যে অশান্তি ও অসহিষ্ণুতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ কিংবা জাতিগত হানাহানি প্রভৃতি দূর করে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে বৌদ্ধদের নিবিড় সম্পর্ক তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, প্রাচীন বাংলায় খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকের মাঝামাঝি থেকে সুদীর্ঘ চারশত বছর রাজত্ব করেছে পাল রাজবংশ। এই পাল রাজগণ ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। পাল রাজা ধর্মপাল রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ধর্মীয় সম্প্রীতির নীতি গ্রহণ করেছিলেন। প্রজাদের ধর্ম-কর্ম সম্পর্কে সচেতনতার এই ঘোষণা দীর্ঘ পাল শাসনামলে অনুসৃত হয়েছিল বলেই মনে করা হয়। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থান ছিল পাল যুগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ন্যায় বৌদ্ধ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর কল্যাণে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সালে বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণীত হয়েছে। এ আইনের অধীনে বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সার্বিক কল্যাণে বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, সংস্কার ও উন্নয়নে সহায়তা প্রদান, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব উদ্‌যাপন এবং ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এই ট্রাস্টের কার্যক্রম ও কর্মতৎপরতা ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে। অসহায় ব্যক্তি ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চিকিৎসার জন্য অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থযাত্রা ও তীর্থব্রত পালনে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া, বাংলাদেশের অর্থায়নে নেপালের লুম্বিনীতে একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথেরের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন; প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, থাইল্যান্ডের হাইকমিশনার ধর্মপালা (Dharmapala), ওয়েরাক্‌কড্ডি (Weerakkoddy), ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নুয়েন (Nguyen), মান (Manh), কুয়ং (Cuong), বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top