ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সীমিত পানিসম্পদের অপরিমিত ব্যবহার, দূষণ ও অনিয়ন্ত্রিত জলবায়ু সংকটে ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্ব, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়বে। পানির অপচয় রোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবার থেকে এ সচেতনতা শুরু করতে হবে। পানি অপচয় রোধে এবং পানির সঠিব ব্যবহারে মা সন্তানকে শিক্ষা দিবে পাশাপশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা শুরু করতে হবে এবং পাঠ্যপুস্তকে এ বিষয়ে অধ্যায় রাখলে শিশুরা ছোট থেকে অবগত হবে এবং পানির গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা পাবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকেও সচেষ্ট হতে হবে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে। রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ পানি বিধিমালা, ২০১৮ কার্যকরকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত জাতীয় কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূগর্ভস্থ ও ভূপরিস্থ পানিসম্পদের প্রাপ্যতা, গুনগত মান এবং ভূগর্ভস্থ পানির নিরাপদ আহরণ সীমা নির্ধারণের জন্য রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ এই ৩টি জেলায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। কৃষি, শিল্প বা গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের জন্য তিনটি জেলায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের নিরাপদ আহরণ সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। আমরা যদি নিরাপদ আহরণ সীমার অতিক্রম করে পানি ব্যবহার করি তাহলে খাবার পানির সংকটের পাশাপাশি পরিবেশ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। দেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় হাইড্রোলজিক্যাল অঞ্চলের ১০টি জেলায়ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও অটোমেটেড মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহার করে একটি নতুন প্রকল্পের কার্যক্রম আগামী জুলাই এ শুরু করে জুন-২০২৬ এ শেষ করার প্রস্তাবনা রয়েছে। এছাড়াও বাকি হাইড্রোলজিক্যাল জোনে অবশিষ্ট ৪৪ টি জেলার ভূগর্ভস্থ ও ভূপরিস্থ পানিসম্পদের প্রাপ্যতা, গুনগত মান, ভূগর্ভস্থ পানির ধারক স্তরের ব্যাপ্তি ও বৈশিষ্ট নিরুপণ করে পানি সংকটাপন্ন এলাকা চিহ্নিত ও ভূগর্ভস্থ পানির নিরাপদ আহরণ সীমা নির্ধারণ কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে সমাপ্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের তথ্য সংগ্রহের জন্য ৫০টি মনিটরিং স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের অর্জিত ফলাফল বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন ও এসডিজির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, পানি সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পানি নীতি-১৯৯৯ এবং জাতীয় পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, ২০০১ প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ প্রণীত হয়। আইনটির সঠিক বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ পানি বিধিমালা, ২০১৮ প্রনয়ণ করা হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এর নির্বাহী পরিচালক মো: জহিরুল হক খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, আইনুন নিশাত প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।