শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: হাওড় অঞ্চলে দেশীয় মাছ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে ‘হাওড় অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা জানান। মৎস্য অধিদপ্তর এ কর্মশালার আয়োজন করে। এ সময় মন্ত্রী বলেন, হাওড় অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করতে না পারলে সামগ্রিকভাবে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। হাওড়ের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী, মৎস্য চাষি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবার সম্মিলিতভাবে কাজ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের সামগ্রিক স্বার্থে হাওড় অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষাসহ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। মাছ যত্নের সঙ্গে বেড়ে উঠার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য হাওড়ে দেশীয় মাছ রক্ষায় নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। মৎস্য খামারিদের পোনা ও ছোট মাছের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। বেপরোয়াভাবে পোনা মাছ ধরা যাবে না। মাছ বেড়ে ওঠার জন্য অভয়াশ্রম দিতে হবে। প্রজনন মৌসুমে মা মাছ নিধন করা যাবে না, হাওড়ে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করা যাবে না। অপরদিকে হাওড়ে কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক বা কীটনাশক যাতে ব্যবহার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, ভাতে মাছের বাঙালির ঐতিহ্য এক সময় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় ৩৯ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দেশীয় মাছ যাতে বিলুপ্ত না হয় সেজন্য ময়মনসিংহে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে। মন্ত্রী আরো যোগ করেন, মৎস্য আহরণ বন্ধকালে মৎস্যজীবীদের ভিজিএফ বিতরণসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে মৎস্যজীবীরাই লাভবান হবেন। মৎস্যজীবীদের লাভের জন্যই সরকার কাজ করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ। কর্মশালায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল কাইয়ূম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জাকারিয়া এবং সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক এম এ জলিল। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক অলক কুমার সাহা। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালামসহ স্থানীয় মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।