ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: দেশে কোরবানির পশুর কোনো সংকট নেই। এ বছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। সে হিসেবে এ বছর ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪ টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বুধবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোরবানির পশুর অবাধ চলাচল ও পরিবহণ নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী একথা জানান। এ সময় মন্ত্রী জানান, এ বছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদি পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩ টি, যা গত বছরের চেয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪ টি বেশি। এর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২ টি গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং ২ হাজার ৫৮১ টি অন্যান্য প্রজাতির গবাদি পশু। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৪ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ১২৮ টি, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৬১৪ টি, খুলনা বিভাগে ১৫ লাখ ১১হাজার ৭০৮ টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬ টি, সিলেট বিভাগে ৪ লাখ ১০ হাজার ২২৫টি, রংপুর বিভাগে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৫১ টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭ টি গবাদিপশু রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এবারও দেশে উৎপাদিত গবাদি পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। অবৈধ উপায়ে পশু বিদেশ থেকে আসলে দেশের খামারে যারা পশু উৎপাদন করছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়গুলো কঠোরভাবে দেখা দরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কোনোভাবেই গবাদি পশু অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, কোরবানির হাটে এ বছর রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ পশু বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। এ লক্ষ্যে গতবছরের ন্যায় এবারও সারা দেশে পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও রেলে কোরবানির গবাদি পশু পরিবহণ করা হবে। যে অঞ্চলে গবাদি পশুর উৎপাদন বেশি সে অঞ্চল থেকে যে অঞ্চলে উৎপাদন কম সে অঞ্চলে রেলের মাধ্যমে পশু পরিবহণ করা যায়। এক্ষেত্রে রেল কম খরচে পশু পরিবহণের সুযোগ করে দেবে। দেশের সর্বত্র যাতে কোরবানির পশু পর্যাপ্ত থাকে সে অনুযায়ী পশু পরিবহণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
খামারিরা যাতে পছন্দ অনুযায়ী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করতে পারে এবং জোর করে কেউ পথে পশু নামাতে না পারে সেজন্য খামারিরা চাইলে ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে পারবে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে- যোগ করেন মন্ত্রী। মন্ত্রী আরো বলেন, কেউ খামারে, খামারি নিজ বাড়ি থেকে কিংবা হাটে আনার পথে পশু বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারাগ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল আদায় করতে পারবে না। তবে রাস্তায় হাট বসানো যাবে না। এছাড়া ডিজিটাল হাটের মাধ্যমেও পশু বিক্রি করা যাবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মোঃ আব্দুল কাইয়ূম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোঃ এমদাদুল হক তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাগণ সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।