ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘বিএনপি’র আন্দোলনের নমুনা হলো, আন্দোলন করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করা, পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা, সারাদেশে গণ্ডগোল করার অপচেষ্টা চালানো।’ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘নামসর্বস্ব যেসব রাজনৈতিক দলের সাথে তারা সংলাপ করেছে, সেগুলোর বাস্তবিক অর্থে কোনো অস্তিত্ব নেই, আছে শুধু সাইনবোর্ড। তারা এই সমস্ত দল নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে বলে ঘোষণাও দিয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও এরকম একটি ঐক্য তারা করেছিল যার ফলাফল হচ্ছে নির্বাচনে বিএনপির পাঁচটি আসন। এ সব দলকে নিয়ে আন্দোলন করলে অতীতে যেমন জনগণ সাড়া দেয়নি, এবারও দেবে না।’ রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সাংবাদিকদের বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন। নির্বাচনের মাঠ থেকে বিএনপিকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠ থেকে তো কেউ কাউকে সরাতে পারে না, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের মাঠ থেকে ২০১৪ সালে বিএনপি পালিয়ে গিয়েছিল এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনের মাঠ থেকে পালিয়ে গিয়ে পরে নির্বাচনের ট্রেনের পাদানিতে চড়ে নির্বাচনে গিয়েছিল। তো এবার তারা নির্বাচনের ট্রেনের পাদানিতে চড়বেন, না কি ট্রেনে চড়বেন সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক, তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক।’ বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে আবারো সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়ে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কমিশন। আর সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে সরকার দেশ পরিচালনা করছিল সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও তাই হবে। অন্য কোনো বায়না ধরে কোনো লাভ নেই। মির্জা ফখরুল সাহেবকে তাদের কর্মীরা যেহেতু সাড়া দিচ্ছে না সেজন্য তাকে গরম বক্তৃতা দিতে দেখা যাচ্ছে।’ এর আগে মন্ত্রী আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘টেকসই উন্নয়নে পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (International Conference on Environmental Protection for Sustainable Development- ICEPSD-2022)-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন। ‘সবুজ বাংলাদেশ-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ (Green Bangladesh-Prosperous Bangladesh) প্রতিপাদ্য নিয়ে এ সম্মেলনের সমাপনীতে ড. হাছান বলেন, সবুজ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য প্রয়োজন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরেই পরিবেশ রক্ষার কাজে হাত দেন। ১৯৮২ সালে কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে বনায়ন শুরু করেন। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকার জন্য সারাবিশ্বে সুপরিচিত। বিশেষ অতিথি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দেশে প্রথম পরিবেশ সুরক্ষা ও বনায়ন নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের পদ প্রবর্তন করেন। এ বিষয়ে দলের প্রথম সম্পাদক ছিলেন বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যিনি এক দশক ধরে অত্যন্ত যত্নের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিশেষ অতিথি পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির এই নিয়মিত আয়োজন যেমন দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করছে, তেমনি দেশ-বিদেশেও পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রণী অবস্থান ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরছে। সম্মেলনের আয়োজক উপকমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমদ, অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত সম্মানিত অতিথি, অধ্যাপক ড. মোঃ আফতাব আলী শেখ স্বাগত ও আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সমাপনী বক্তা হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।