কুয়াকাটা, পটুয়াখালী, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আনবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। শুক্রবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত সীউইড মেলার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণের জনপদের উন্নয়নে অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ সেতুর কারণে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে এটি কখনোই সম্ভব হতো না। প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় আগে এ অঞ্চলে উৎপাদিত মাছ, মাংস, দুধ, ডিমসহ অন্যান্য কৃষিসামগ্রী রাজধানী ঢাকায় পৌঁছানো বা রপ্তানির সুযোগ ছিল না। পদ্মা সেতুর সংযোগের ফলে দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত মাছসহ অন্যান্য কৃষিসামগ্রী দ্রুততার সাথে ঢাকায় যেতে পারবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠা হবে। প্রক্রিয়াজাত করা সামগ্রী সরাসরি বিদেশেও পাঠানো যাবে। এ সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় আসা-যাওয়াই শুধু সহজ করবে না, এ অঞ্চলের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করবে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক।
মন্ত্রী আরো বলেন, মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্বাদু খাবারের যোগান দিতে সীউইড অত্যন্ত সহায়ক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সীউইডের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশে সীউইড প্রাপ্তির একটি বড় অঞ্চল কুয়াকাটা। এ অঞ্চলের পর্যটন হোটেলসহ অন্যান্য হোটেল-মোটেল সংশ্লিষ্টদের তাই সীউইডের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সীউইডের আহরণ ও বিপণনে যেন কোনো বাধার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এর আহরণ, চাষ পদ্ধতি ও গুণাবলি সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। খাদ্য, ঔষধ ও প্রসাধনী শিল্পসহ নানা ক্ষেত্রে সীউইডের বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করতে হবে। বিদেশে সীউইড রফতানির বড় বাজার রয়েছে, সেটা আমরা ধরতে চাই। সীউইড মেলা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রগামী প্রতিটি নৌযানের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সমুদ্রগামী সব মাছ ধরার নৌযানে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সমুদ্রে মাছ ধরা নৌযানের অবস্থান জানা যাবে। ফলে অবৈধ উপায়ে এবং যত্রতত্র মাছধরা ট্রলার যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। আর বৈধ উপায়ে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা দুর্ঘটনায় পড়লে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্তত ৯০টি দেশে বাংলাদেশের মাছের চাহিদা রয়েছে। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে দক্ষিণাঞ্চলে মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্যাকেটজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠবে। এখান থেকে প্যাকেটজাত মাছ সরাসরি রপ্তানি করতে পারলে মৎস্য শিল্পে দক্ষিণাঞ্চল এগিয়ে যাবে, এ অঞ্চলের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।