All Menu

মুখোশের আড়ালে অন্য মানুষ

প্রতিকি চিত্র।

সমস্যা গুরুতর কিনা সে রায় আপাতত এড়িয়ে গেলাম কিন্তু এই যে বক ধার্মিকরা সবচেয়ে বেশি ধর্মের কথা বলছে, চোর যে আচরণে সাধু সাজছে, ঘুষখোর যে খুব নীতিকথা শোনাচ্ছে-এর পরিণাম নিশ্চয়ই হরিনামের মত পুণ্য আনবে না। নীতি-হীন রাজনীতিক না হয় জনগণকে ধোঁকা দিতে টুপি-পাঞ্জাবী, তসবির আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু ভণ্ড ধর্ম-নীতিকথা বেশি বললে যে ওর দণ্ড আরও বাড়বে-এই বোধ জন্মাতে সাহায্য করা উচিত।

না মানা কিংবা বিশ্বাস না করা এক কথা কিন্তু নিজে পালন না করে অন্যদের ধর্ম-কথা শুনিয়ে ফায়দা হাসিলের শাস্তি কত ভয়াবহ হতে পারে তা একটু মরলেই বোঝা যাবে! অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, খাবে মদ/বানাবে অশ্লীল সিনেমা কিন্তু সেখানেও শুরুতে ধর্মীয় আয়োজন করে কিছুটা সওয়াব এবং বারাকাহ কামাই করিয়ে নিতে চায়! ধান্ধা-বাজির লেভেল কত উঁচুতে পৌঁছিয়েছে ভণ্ডকুল!

কিছু কিছু ঘুষখোরের সেজদায় মসজিদের টাইলস ক্ষয়ে যাচ্ছে, দুশ্চরিত্র নীতি-হীন মানুষের নীতিকথায় সমাজ সংসার বিষিয়ে উঠেছে, ভণ্ড-প্রতারকের মুখোশোর সাধুতা ও শুদ্ধতায় মানুষের বিশ্বাসের পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে-অথচ মানুষ এখনো মিষ্টত্বে ভুলছে, ইশারাতেই খুলছে এবং অমানুষদের দল মিছিলে মিছিলে ভারী করছে। এই-যে ঠকানোর খেলা সেখানে স্বার্থ-বাদীরা আড়ম্বরে মেলা বসিয়েছে। মদদ দিচ্ছে ক্ষমতার মসনদ৷ জনতার জীবন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে তবুও ক্ষমতার দয়া আনছে না। সহজ-সরল মানুষেরা মৃত্যুকেই শ্রেয় ভেবে অসহায় আত্মসমর্পণে অপেক্ষা করছে।

যিনি যত ভণ্ড তার কণ্ঠ তত উঁচু, যার অন্যায়ের খতিয়ান যত লম্বা তার ক্ষমতা তত অধিক। আজকাল অমানুষেরাই সমাজে মানুষের রোলগুলি পরিচালনা করছে। এরাই ধর্ম-রাজনীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে লুটেপুটে খাচ্ছে শরীর ও সম্পদ। মিথ্যা আশ্বাসে ভরিয়ে তুলছে নগর। প্রগলভ মিথ্যাচারে সংসার ভরিয়ে দিয়েই কায়েমি স্বার্থ উদ্ধার করছে।চোখ খুলুন, কপট নীতিবানদের দেখুন! কী ভয়ানক-ভাবে ধর্মকেই এরা সহানুভূতি আদায়ের অনুষঙ্গ বানিয়েছে; ভিখারি ও রাজ ভিখারির পার্থক্য যতটুক!-ততটুকু লজ্জাও এদের অবশিষ্ট নাই।

রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top