যার সাথে সময় কাটাবেন, যার আশেপাশে থাকবেন-একসময় আপনিও সে-তে পরিণত হবেন। সে ভালো মানুষ হলে, সেটা ভালো পরিবেশ হলে আপনিও ভালো হবেন। সে মন্দ হলে, পরিবেশে দুর্গন্ধ থাকলে আপনিও তাই হবে। পরিবেশের সঙ্গ আপনাকে এতো-বেশি প্রভাবিত করতে পারে যা অন্যকিছুতেই পারে না। তাইতো সন্তানরা বাবা-মায়ের বৈশিষ্ট্য পায়, শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের স্বভাব পায় এবং কর্মীরা নেতার চরিত্র পায়। আপনি কি-সেটা আপনার চারপাশ দেখেই বলে দেয়া যায়। আপনি কেমনে কথা বলেন, আপনি কেমন আচরণ করেন-এগুলো দ্বারাই জানা যায়, আপনি কাদের সাথে চলেন এবং কোথায় মেশেন।
ভালো থেকে ভালো পেতে সাধনা করতে হয় কিন্তু মন্দ থেকে মন্দ এসে আপনাআপনি চেপে বসে। সুতরাং সঙ্গী, শিক্ষক এবং নেতা যাচাই-বাছাই করে নির্বাচন ও গ্রহণ করা দরকার। যে কাউকে বন্ধু বানানো ঠিক নয়। যারা বিপথগামী তাদের থেকে দূরত্বে থাকাই কাম্য। আপনি কাদের সাথে সুসঙ্গ রাখেন সেটা দ্বারাই নির্ধারিত হবে আপনি মরার আগেই মরে যাচ্ছেন নাকি মরার পরেও বেঁচে থাকছেন! যদি এমন কারো সাথে মিশতে বাধ্য হতে হয়, যাদের থেকে গ্রহণ করার কিছু নাই তবে তাদের থেকে যে সকল আচরণ আপনি ঘৃণা করেন সেগুলো নিজের থেকে দূর করতে শিখুন। মানুষের হৃদয়ে ভালোবেসে একটু জায়গা পাওয়ার মাঝেই মানবজীবনের তামাম কৃতিত্ব ও সফলতা নির্ভর করে।
বইয়ের সাথে একটু একটু সময় কাটান। শত্রু কমে যাবে এবং মনের অনেক বন্ধ ও বদ্ধ দরজা খুলে যাবে। অতীতের সাথে কথা বললে, অতীতকে প্রশ্ন করলে পাপ কমে যায়। আপনি কারো সাথে মিশে যদি মানুষকে গালি দেয়া শিখেন, মানুষকে ঠকানোর কৌশল জানেন তবে সেই সময়টুকুর জন্য আপনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে। কারো কাছ থেকে শিখতে হলে মানুষকে ভালোবাসার উপায় জানুন, মানুষকে হৃদয়ে ধারণ করার পদ্ধতি শিখুন। কারো ক্ষতি করা, কাউকে ঠকানো-এসবে সাময়িক লাভ দেখতে পারেন কিন্তু ক্ষতিই যখন নেশা হয়ে যাবে তখন কেউ আপনাকে আর মানুষ বলবে না। কাজে সঙ্গী নির্বাচনে বিবেক-বিবেচক হোন। মোহ এবং আবেগ দূরে রেখে বাস্তবতার নিরিখে আশপাশের বিচার করে তবেই সেখানে জড়ান। আপন মানুষ খুঁজুন।
কয়েকজন ভালো বন্ধু, এক-দু’জন ভালো শিক্ষক, একজন আদর্শিক নেতা আপনাকে মহৎ মানুষে পরিণত করতে পারে। বিশ্বস্ত ও উপকারী বন্ধুর চেয়ে পরম পাওয়া মানবজীবনে আর কিছুতেই নাই। ভালো শিক্ষক জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে। রাজনৈতিক বা কর্মক্ষেত্রের গুরু লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বংশ পরম্পরায় মানবদেহে দু’চারটা মন্দ জীন আসলেও সেটা যদি শিক্ষা ও সততা দ্বারা দমিয়ে রাখা না যায় তবে জীবনের সফলতা কি দিয়ে বিচার হবে? ভালোর আলো প্রতিষেধক। জীবনে এমন মানুষের সাথে দেখা-পরিচয় এবং সম্পর্ক না-হোক যারা অমরত্বের পথে প্রতিবন্ধক। কয়েকজন ভালো সঙ্গী জীবনকে আমূল বদলে দিয়ে যাত্রা আলোর পথে পরিচালিত হোক। ছোট্ট জীবনে এরচেয়ে বড় কোন চাওয়া হতে পারে না। চাওয়াটুকু চেষ্টায় পূরণ হোক।
রাজু আহমেদ।
কলাম লেখক।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।