ময়মনসিংহ ব্যুরো, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রাকৃতিক সমস্যা সমাধান করে বাংলাদেশে সারা বছর মাছের পোনা উৎপাদন ঠিক রাখতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) একটি প্রকল্প চালু করেছে। শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে নবনির্মিত গবেষণাগার এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান। এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস ও মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আবুল মনসুর সহ আরও অনেকে।
সাধারণত: বাংলাদেশে মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত হ্যাচারিতে মাছের প্রজনন হয়ে থাকে এবং অন্যান্য মাসে বায়ু ও পানির তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে মাছের পোনা উৎপাদন সম্ভব হয়না। এতে করে শীতকাল ও এর অবিলম্ব পূর্ব ও পরে মাছের পোনা পাওয়া যায়না এবং এই সময়ে মাছের সকল হ্যাচারি বন্ধ থাকে এবং পরবর্তী গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)’তে এবার প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাকৃবির মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের একোয়ালচার বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক ও ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. শাকুর আহম্মদের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অদূরে মাছের জন্য জলবায়ু গবেষণার গবেষণাগার (এলসিআরএফ) এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে তেলাপিয়া, পাংগাস ও শিং সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও পোনা উৎপাদনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও পরিবর্তিত জলবায়ুতে মাছের টেকসই উৎপাদন ও প্রজননের ক্ষেত্রে জলবায়ু প্রশমন ও অভিজোজন কৌশল উদ্ভাবনে বহুমাত্রিক গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে।
এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের একোয়ালচার বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে যে মাত্রারিক্ত তাপমাত্রা, অতি নিম্ন তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টি, সূর্যের আলোর অপ্রতুলতাজনিত কারণে মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও প্রজনন সক্ষমতা কমে যায়, ফলে গুণগত মানের পোনা উৎপাদন ব্যাহত হয়।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে কিভাবে অভ্যন্তরীণ সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পানির তাপমাত্রা ধরে রেখে মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও পোনা উৎপাদন সম্ভব তা যথাযথভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে যে, এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তিত জলবায়ুতে মাছের বৃদ্ধি ও পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশে বছরের বেশি সময় ধরে টেকসই উপায়ে মাছ ও পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বলেন, এখানে একটি বহুমাত্রিক উন্নত গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে, যা সনাতন হ্যাচারি পদ্ধতি ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি উভয় উপায়ে মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও পোনা উৎপাদনের গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্প দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।