মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁঞা বাবুল, ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ মে) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আর এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের একজন নেতাকে মারধর করা হয়। মারধরকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে ইট-পাটকেল বিনিময় হয়। আর এই ঘটনার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (৩১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের পরীক্ষা অনিবার্য কারণ-বশত বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। আর শিক্ষার্থীরা জানান, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ক্লাস করা থেকে বিরত আছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবারের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকেই এখনও মেডিকেলে ভর্তি আছে। তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের চলমান পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে চলমান সমস্যা নিরসনের ব্যবস্থা করব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনবো। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর অধ্যাপক ড. মহির উদ্দিন বলেন, আমরা উভয় পক্ষের নেতার সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসায় দ্রুত চেষ্টা করছি। যারা আহত হয়েছেন, তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে মারামারির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনব। এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, ‘বাকৃবিতে যে ঘটনাটি ঘটেছে পুরোটাই অনাকাঙ্ক্ষিত। শহীদ শামসুল হক হল সাধারণ সম্পাদক নিয়ন্ত্রণ করে। তবে তাদের মধ্যে থেকে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বা সামনে এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে তাদের শনাক্ত করে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। তবে মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয় নি। সে নিজ ইচ্ছায় হল থেকে বের হয়ে গেছে। হল থেকে বের হয়ে গেলেও হলের কিছু জুনিয়রকে তার নিজের গ্রুপে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এ ঘটনার জন্য কয়েকজন তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছে। তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে যারা এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুইন নাদিম আল মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেয় বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। পরে মুন্না ৩০ মে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে.আর মার্কেটে আসলে সভাপতি গ্রুপের প্রায় ২০ জন তার উপর চড়াও হয়ে কিল, ঘুষি-থাপ্পড় মারলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ঘটনাটি জানতে পারলে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া,ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।