All Menu

পুলিশ কনস্টেবল হত্যার ঘটনায় বড়ভাইসহ ২জন গ্রেফতার

ময়মনসিংহ ব্যুরো, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ময়মনসিংহে পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মাদকের টাকার জন্য পরিবারের লোকজনদের বিরক্ত করায় তাকে (সাদ্দাম)খুনের ঘটনায় সহোদর বড়ভাইসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত দু’জন হলেন নিহত পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনের ভাই হাবিবুল করিম তপু ও তপু’র বন্ধু মুক্তাগাছা উপজেলার আনোয়ারুল ইসলাম। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ ও পরিদর্শক ফারুক হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে ময়মনসিংহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম জানান,ময়মনসিংহ সদরের বাঘেরকান্দা গ্রামের রেজাউল করিম আবুলের ছেলে নিহত পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেন সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে বাড়িতে এসে বসবাস করছিলেন। এসব কারণে পুলিশ বিভাগ থেকে বেশ কয়েকটি লঘু এবং গুরুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন। কিছুদিন ধরে তিনি মাদক সেবনের টাকার জন্য পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার করার পাশাপাশি বাবা-মাকে কয়েক দফা মারধরও করেন। সেই সঙ্গে তিনি একটি মোটরসাইকেল বন্ধক দিয়ে টাকা নিয়ে মাদক সেবন করেছেন। সম্প্রতি পরিবারের প্রয়োজনে একখণ্ড জমি বিক্রি করলে ওই টাকা দিতে সাদ্দাম হোসেন তাঁর বাবাকে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এই ঘটনায় পরিবারে ব্যাপক অশান্তি সৃষ্টি হয়। এ খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন সাদ্দামের বড় ভাই হাবিবুল করিম তপু। ঘটনার দিন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হাবিবুল করিম তপু তার বন্ধু আনোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে ডেকে স্থানীয় একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যান। এসময় তপু জানতে চান, কেন তিনি (সাদ্দাম) বাবা-মাকে লাঞ্ছিত করেছেন এবং চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন না।সেইসাথে মাদক সেবন থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান। কিন্তু ভাইয়ের এসব কথায় সাদ্দাম হোসেন পাত্তা না দিয়ে কথা-কাটাকাটিতে জড়ায়। এরই একপর্যায়ে গলায় রশি লাগিয়ে গাছের সঙ্গে আটকে শ্বাসরোধ করে সাদ্দাম হোসেনকে হত্যা করা হয়। এই কাজে তপুকে সহযোগিতা করেন তাঁর বন্ধু আনোয়ার হোসেন। পরে তপু এবং তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন লাশ (সাদ্দাম) ফেলে রেখে পালিয়ে যান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দারের করেন। পরে মামলার তদন্তে নামে পুলিশ। এ সময় সন্দেহভাজন হিসেবে সাদ্দামের বড় ভাই হাবিবুল করিম তপু ও তপু’র বন্ধু আনোয়ারুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর হত্যার আসল রহস্য উদঘাটিত হয়।’ পরবর্তীতে আসামি দু’জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি সাদ্দাম হোসেন ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ছুটি শেষ হয়ে গেলেও তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। শনিবার বিকেলে স্থানীয় এক নারী বাগানে পাতা কুড়াতে গিয়ে সাদ্দামের মরদেহ পরে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top