All Menu

ঝিনাইদহে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে চলছে বেকারির ব্যবসা

হেলালী ফেরদৌসী, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানগুলোতে প্রকাশ্যেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে বেকারি, মিষ্টির দোকান ও হোটেলগুলোতে নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি করে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। কালীগঞ্জের বিভিন্ন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সরবরাহকৃত খাদ্য সামগ্রী যেসব বেকারিতে তৈরি হচ্ছে তার বেশির ভাগের নেই কোনও লাইসেন্স নবায়ন ও বিএসটিআইয়ের অনুমোদন। স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ ময়দার পরিবর্তে নিম্নমানের আটা এবং বিষাক্ত কেমিক্যাল অ্যামোনিয়া ব্যবহার করে বেকারিগুলোতে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। ফাস্ট ফুড খাদ্যসামগ্রী হিসেবে বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ নানা জাতীয় বেকারি খাবার পরিবারের প্রায় সকলেই খেয়ে থাকেন। দিনদিন এর চাহিদাও কম নয়। শিশুদের পছন্দের খাবার হিসেবেও এসব খাবার তাদের কাছে প্রিয়। এছাড়া বাসাবাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের বেকারি খাবার একটি অন্যতম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব খাবারের চাহিদাও ব্যাপক।এ জেলার গ্রাম থেকে শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে হরহামেশাই প্রতিদিন পৌঁছে যায় এসব খাদ্যসামগ্রী। এসবের বেশিরভাগ পণ্যে থাকে লেবেল। ফলে মানুষ নিরাপদ বা স্বাস্থ্যসম্মত মনে করেই এসব খেয়ে থাকেন। কিন্তু এসব তৈরির ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। যা বাধ্যতামূলক। কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৪ টি বেকারি রয়েছে। এর বাইরেও যত্রতত্র যেখানে সেখানে নামে বেনামে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু বেকারি। কোটচাঁদপুর সড়কে মোচিক তেল পাম্পের পশ্চিমে শিশির বেকারি নামের একটি কারখানা রয়েছে। শিশির বেকারির মালিক রফিকুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘ ৭ বছরের অধিক সময় ধরে এই ব্যবসা করে আসছেন।তিনি বেকারিতে কেক,রুটি,বিস্কুট, পেডিস,ডেনিস,ভাজা,লাড্ডু, জন্মদিনের কেক তৈরি করে স্থানীয় বাজার ও ইউনিয়নের বাজার গুলোতে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। সরজমিনে বেকারির কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়,অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ময়লা ও নোংরা-যুক্ত পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা হচ্ছে। কারখানাটিতে মশা মাছি উড়ে বসছে তৈরিকৃত খাবারের উপর, নিন্মমানের খাদ্য উৎপাদন সামগ্রীর ব্যবহার করা হচ্ছে।শু ধু তাই নয়, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রং ও কেমিক্যাল এর ব্যাবহারও চোখে পড়ে। পাশাপাশি বেকারি কারখানার শ্রমিকরা নোংরা পোশাকে ঘর্মাক্ত শরীরে উৎপাদন কাজ করছেন। এই বেকারির উৎপাদিত খাদ্য দ্রব্যের কোনোটিতেই নেই কোনও বিএসটিআই এর অনুমোদন। বেকারির ব্যবসা পরিচালনার জন্য যেসব নিয়ম নীতি মানা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবশ্যক তার কিছুই নেয়। স্যানেটারী লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্সও এই বেকারির নেয়। এ ব্যাপারে বেকারি মালিক রফিকুল ইসলাম জানান,আমার ট্রেড লাইসেন্স আছে,আর অন্য কোনও কাগজ নেয়। আমার ছোটো ব্যবসা হওয়ায় ওইসব কাগজ করিনি। শুধু আমি না অনেক বেকারি মালিক এভাবেই কাজ করছে। আমাকে না ধরে সেসব বেকারি গুলো ধরেন। কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন জানান,শিশির বেকারির কাঁচা ঘরে ফ্যাক্টরি হওয়ায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে উনি ব্যর্থ হয়েছেন। ইতঃপূর্বে তার কারখানা পরিদর্শন করে তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। এই নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে পুনরায় পরিদর্শন করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ জিয়াউল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান,খাদ্য দ্রব্য উৎপাদনের যথাযথ প্রক্রিয়া ও নিয়মাবলী অনুসরণ না করে যদি উৎপাদন কার্য পরিচালনা করে এবং উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-পূর্বক ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ঐ বেকারিতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top