ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পঞ্চগড়ে এক কিশোরীকে (১৩) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে সাইদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালতের বিচারক। তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ধর্ষক আসামী পলাতক রয়েছে। একই মামলায় অপর দুই আসামী জাহেদুল ইসলাম ও পারভিনা বেগম দম্পতির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) তারিকুল কবির এই আদেশ দেন। সূত্রে জানা যায়, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাইদুল ইসলাম চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার চড়বাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোটাগ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে। সে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার এ/পি এ্যাকোয়া কোম্পানি মাঝিপাড়া শালবাহান এলাকায় রাজমিস্ত্রি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মামলা থেকে খালাস দম্পতি মাঝিপাড়া ডাক-বদলী এলাকার বাসিন্দা। এদিকে ভিকটিম কিশোরী তেঁতুলিয়ার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ডাকবদলী গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় রাষ্ট্র-পক্ষের আইনজীবী (পিপি) আজিজার রহমান আজু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী সাইদুল তেঁতুলিয়ায় কর্মরত অবস্থায় ওই কিশোরীকে বিভিন্ন ভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসতেন। গত ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রাতে অপর দুই আসামীর সহায়তায় কিশোরীকে কুপরামর্শে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় প্রধান আসামী সাইদুল কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর কিশোরীকে বিবাহের কথা বলে তালবাহানা করে কালক্ষেপণ শুরু করে। এর পর ভিকটিম ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মেয়েটি পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরিবারের লোকেরা সাইদুলের সাথে কথা বলতে গেলে সে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়া শুরু করে। এর পর স্থানীয় ভাবে কোন সমাধান না পেয়ে ১৩ সালে ২৪ আগস্ট ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় সাইদুলকে প্রধান আসামী করে ৩ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। এর পর প্রায় দীর্ঘ ৯ বছরের মাথায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সাইদুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এসময় অপর দুই আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।