ইয়াকুব নবী ইমন, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এক গৃহবধূকে অর্ধ-নগ্ন করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ ও কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে আটক রেখে চাঁদা দাবির ঘটনায় কবিরহাট থানায় মামলা হয়েছে। তবে ঐ ভুক্তভোগী গৃহবধূ স্বামীর বাড়ি ধনশালিক ইউনিয়নে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, আবু বক্কর ছিদ্দিক তানভির (৩৬)। সে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউপি সদস্য মোস্তাফিজের ভাই এবং হাজী সোলায়মানের ছেলে অপর আসামি ইকবাল হোসেন (২৬) একই গ্রামের তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যানের ছেলে । মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার ২৬ জুলাই রাত ১০টার দিকে তিনি তার পরিবারের সকল সদস্যসহ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর আসামি আবু বক্করের নেতৃত্বে রাজন (৪০), আলতাফ (৩০), ইকবাল (২৬), রুহুল আমিন (৪৫) ও ফারুক (৩৬)সহ অন্যান্য আসামিরা ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে। ওই সময় আসামি আলতাফ আমার পরিহিত কাপড় খুলে অর্ধ-উলঙ্গ করে এবং রাজন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। অন্যান্য আসামিরা আমার স্বামী কামালকে বেধড়ক মারধর করে দুটি মোবাইল, নগদ ৮হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে আরও জানা যায়, সেখানে আমার দ্বিতীয় স্বামীর কাছে দুই লাখ চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে না পারায় তাকে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটক করে রাখে তারা। এ সময় আমি ভয়ে পালিয়ে যাই। তারপর আমার স্বামী কামালের কাছে নগদ টাকা না থাকায় বাছুরসহ একটি গাভী নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে আমার স্বামী বিবাহের কাবিন দেখালে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। যদি কাউকে কিছু জানাই তাহলে আমাকে আমার স্বামী সন্তানসহ সবাইকে হত্যা করার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন,এ ঘটনার আমি কিছু জানিনা। আমার পরিষদে কাউকে আটক করা হয়নি। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করে কবিরহাট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এজহার নামীয় আসামি ৭জন এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০-১২জন। ওসি আরও জানায়, চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদে গৃহবধূর স্বামীকে আটকে রেখে চাঁদা আদায় এবং দাবির বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বুধবার সকালে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।