All Menu

পঞ্চগড়ে গ্রাহকের কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে নারীদের ঋণ দেয়ার নাম করে সঞ্চয় হিসেবে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে আর্স বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অস্থায়ী কার্যালয়/ অফিসের বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের, আর্স বাংলাদেশ নামের ওই এনজিওর পরিচালক বেলাল হোসেন এবং পলাতক ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক ঋণ গ্রহীতা নারী। তবে পলাতক ওই ম্যানেজারের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ও ঋণ গ্রহীতা নারীরা জানান, ওই এনজিওর কর্মকর্তা ১০/১২ দিন আগে শাখা অফিস হিসেবে পুরাতন পঞ্চগড়ের ধাক্কামাড়া এলাকার আব্দুল কাদেরের বাড়ি ভারা নিয়ে আর্স বাংলাদেশ নামে শাখা অফিস স্থাপন করে। জানতে পারি এনজিওর প্রধান অফিস যশোর সদর উপজেলার কোতোয়ালী থানার কাজী পাড়া কাঠালতলার ২০৩ নাম্বার বাড়ি। এমনকি এনজিওর পাশ বইয়ে এনজিওর রেজিস্ট্রেশন নাম্বারও উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে অভিযোগে জানা গেছে, আর্স বাংলাদেশেরর পঞ্চগড় শাখার ওই কর্মকর্তা গত মে মাসের শেষের দিকে সদর উপজেলার পূর্ব ইসলামবাগ, সীতাপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৪৩ জন নারীকে এনজিওর সদস্য করেন। ১০/১২ জন নারীকে নিয়ে একটি করে দল গঠনও করেন তিনি । প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ২’শ টাকা করে সঞ্চয় জমা নেন। পরে তাদেরকে এক লক্ষ টাকা করে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগ্রহীদেরকে আরও ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা করার নির্দেশনা দেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দেন। তার মোবাইল নাম্বারও ০১৭৫৯৯৭৩২৯০ সদস্যদেরকে দেন। গত ৫ জুন ম্যানেজার ঋণ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় চাইলে প্রায় ওই ৪৩ সদস্য ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাঁকে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেন। এর পর তাদেরকে মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে অফিসে গিয়ে ঋণের টাকা গ্রহণ করতে বলেন। কিন্তু মঙ্গলবার অফিসে ঋণ চাইতে গেলে তারা অফিসে তালা ঝোলানো দেখতে পান। পরে ওই ম্যানেজারের মোবাইল নাম্বারে ০১৭৫৯৯৭৩২৯০ যোগাযোগ করলে তার মোবাইলও বন্ধ পান। পরে তারা বাড়ির মালিক আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে অফিস বন্ধ করে ওই লোক চলে গেছে বলে জানান তাদের। এরপর তারা আর্স বাংলাদেশের ওয়েব সাইট থেকে পরিচালক বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। এদিকে বেলাল হোসেন তাদেরকে বলেন পঞ্চগড়ে আর্স বাংলাদেশের কোন শাখা অফিস নেই। পঞ্চগড়ের সীতাপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী বেনু জানান, এক লক্ষ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ওই ম্যানেজার আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার দলের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করেও নেয়। ৭ তারিখ আমাদেরকে অফিসে আসতে বলে। আমরা অফিসে এসে দেখি তালা বন্ধ। মোবাইল ফোনও বন্ধ। আমি তার নাম জানিনা। পরে থানা পুলিশকে অভিযোগ দেয়া হয়। পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার মেহেরুন আক্তার বলেন, ম্যানেজার আমাকে দলের নেতা বানিয়ে দেন। আমাকে তিনি জুয়েল নামে পরিচয় দিয়েছিলেন। আমি আমার দলের বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে দিয়েছি। ৭ তারিখ ওই অফিস বন্ধ পাই। এখন বাকি সদস্যরা আমার স্বামীর ভ্যান আটকে রেখেছে। ভ্যান চালিয়েই আমাদের সংসার চলে। বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের বলেন, ওই ম্যানেজার একদিন আগে আমার বাড়িতে কাগজ পত্র জমা রেখে চলে গেছে। আগে ভাড়া দেয়নি। আমি তাদের সম্পর্কে কিছু জানিনা। তারা ভাড়া নেয়ার কথা ছিলো। আর্স বাংলাদেশের পরিচালক বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কার্যক্রম পঞ্চগড় জেলায় নেই। কেউ আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি। এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top