ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ঢাকায় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখার পরিচালক (উপসচিব) লাবণ্য আহমেদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের পাশাপাশি কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার ( ৩রা নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে মরহুমার বাবাব বাসায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে মরহুমার পরিবার ও স্বজনরা। এই আয়োজনে তার পরিবারের সদস্য, নিকট আত্মীয়, সহকর্মী ও বন্ধু-বান্ধবরাও উপস্থিত ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর লাশ দেশে আসার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাবণ্যের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদের মন্ত্রী হোস্টেলের মিডিয়া সেন্টারে। অন্যদিকে দ্বিতীয় জানাজা আয়োজন করা হয়েছিল মোহাম্মদপুরের বায়তুস সালাম জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। জানাজার নামাজের আগে লাবণ্যের সাহকর্মীরা তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়া উপস্থিত তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে তার মায়ের হয়ে সবার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করেন। দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন করার পর তাকে রাজধানীর আজিমপুর গোরস্থানে ধাফন করা হয়েছিল। সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক লাবণ্য আহমেদের মৃত্যুতে স্পিকারের শোক প্রকাশের পাশাপাশি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন। এছাড়া লাবণ্যের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান স্পিকার। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ পাবলিক রিলেশন এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ও পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও সংসদ সচিবালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বিগত পাঁচ বছর ধরে দূরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। অস্ত্রোপচার পরবর্তী জটিলতায় অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী, বন্ধু-স্বজন রেখে গেছেন।
লাবণ্য আহমেদ পেশাগত জীবনে একজন দায়িত্বশীল, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে নিজ কর্মক্ষেত্র, গণমাধ্যম এবং তথ্য ও সম্প্রচার ক্ষেত্রে সুপরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে আমৃত্যু জনকল্যাণে কাজ করে গেছেন তিনি । তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ পাঠের পাশাপাশি অনুষ্ঠান উপস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। লাবণ্য আহমেদ এর বাবা নাসির আহমেদ বেনু বাংলাদেশ আর্মস ডিলার্স অ্যান্ড ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং তার মা শাহেনশা বেগম বাংলাদেশের ইতিহাসের বরেণ্য দুই ব্যক্তি জহির রায়হান ও শহীদুল্লাহ কায়সার এর বোন। তিনি ১৯৬৭ সালে পিরোজপুর জেলার বড় মাছুয়া গ্রামের দারোগা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের পর ১৯৯৬ সালের জুলাইয়ে সহকারী পরিচালক হিসেবে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ অধিশাখায় যোগদান করেন তিনি। এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছিলেন ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ অন্যান্য হুইপরা। এছাড়া জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের পক্ষে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সভাপতি এ কে এম জি কিবরিয়াসহ সকল সদস্য।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।