All Menu

৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে চা বাগানের শ্রমিকদের ধর্মঘট

মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা কোন টেলিভিশনে দেখেনি বা শোনেনি। নেতারা এটি প্রধানমন্ত্রীর নামে মিথ্যে নির্দেশনা দিয়ে আমাদের কাজে যেতে বলছেন। ৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে চা বাগানের শ্রমিকরা আবারও আন্দোলন শুরু করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ভাড়াউড়া চা বাগানের নারী চা শ্রমিকরা জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া কে আশ্বস্ত করেছেন এখন থেকে তারা কাজে ফিরবেন। শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন তাদের মজুরির বিষয়টি দেখেন এটাই তাদের দাবি। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সরকারি পুলিশ সুপার শহিদুল হক মুন্সী, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শামীম অর রশিদ তালুকদার, ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবিরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রে জানা গেছে, চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তরের এর সাথে দফায় দফায় বৈঠক হয়। কোন বৈঠকেই বিষয়টি সুরাহা না হলে গত শনিবার শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে এক বৈঠকে জানানো হয় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের বাহিরে যাবেন তিনি বলেছেন বাহির থেকে এসে গণভবনে শ্রমিকদের নিয়ে বসবেন এবং তাদের কথা শুনে তাদের সুযোগ সুবিধার বিষয়টি দেখবেন। এটি প্রথমে চা শ্রমিক নেতারা মানলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেন। সর্বশেষ রবিবার রাত ৯টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসন পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি শ্রমিক নেতাদের বলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার চা বাগানে কাজে যোগদেয় শ্রমিকরা। অনেকে নিজেকে সাহায্য করতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও নিয়ে যায়। দিনভর পাতাও তুলে তারা। তবে দুপুরের পর চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের আদেশ অমান্য করে একটা অংশ আবারও মিছিল বের করে। রবিবার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠকে ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গল এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম, চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, সহ-সভাপতি পঙ্কজ কন্দ, বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, কমলচন্দ্র ব্যানার্জিসহ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এদিকে এই দাবীকে না মেনে একটি অংশ জেলার বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে নামে তারা ৩শ টাকা মজুরি দাবী করে। শ্রীমঙ্গল খাইছড়া চা বাগানের শ্রমিক সন্তান রাঘব গোয়ালা জানান, ৩শ টাকা মজুরি দেয়ার কথা বলে আমাদের আন্দোলনে নামিয়েছে। এখন ১২০ টাকা মজুরিতেই আবার কাজে যাবো এটা কেমন কথা। তাহলে মিছিল করলাম কেন। আন্দোলন করলাম কেন। এ সময় একই বাগানের দিলীপ ভুইয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আমরা নিজের কানে শুনলে আন্দোলন থেকে সরে আসবো না হয় তিনশ টাকা দিলে আন্দোলন থেকে সরবো। এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় ঢাকা মৌলভীবাজার সড়কে, শ্রীমঙ্গল লেবার হাউজের সামনে ও কমলগঞ্জের সমশের নগর, মৌলভী চা বাগানসহ বিভিন্ন চা বাগানে ৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে শ্রমিকরা। মিছিলে অংশ-নেয়া শ্রীমঙ্গল কালিঘাট চা বাগানের অবান তাঁতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আমরা সরাসরি শুনিনি। এটা নেতাদের ভাওতাভাজি। আমরা মজুরী ৩শ টাকা চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top