All Menu

কোরবানির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রস্তুত প্রায় দুই লাখ পশু

আশরাফুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় দুই লাখ পশু। জেলার ১৩ হাজার ০১ জন খামারি এসব পশু প্রস্তুত করেছেন। তবে পশু পালন করতে গিয়ে খাবারের খরচ বেশি হওয়ায় প্রত্যাশিত দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা। সংশ্লিষ্ট ও খামারিদের মাধ্যমে জানা যায়, ইতিমধ্যে কোরবানির পশু স্বল্প পরিসরে ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াচ্ছেন। এছাড়া পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেকটাই বেড়েছে বলে জানান খামারিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশংকরবাটি এলাকার মো: আমির আলী বলেন, আমার খামারে ৫০ টি মতো গরু ছিল, ইতিমধ্যে ৩০ টি বিক্রি হয়ে গেছে। কোরবানির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে দেশী জাতের গরু কোরবানির বাজারের বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি। এসব গরুকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গরু গুলোকে প্রতিদিন দুই বেলা প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন ভুট্টা, খৈল,কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি ও খড় খাওয়ানো হয়। দিনে দুই-তিনবার গোসল করানো হয়। পশুর থাকার জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখাসহ সার্বক্ষণিক ফ্যান চালিয়ে পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গরু পালনে খরচ বেড়েছে অনেক। সে তুলনায় এইবার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। গোমস্তাপুর উপজেলার গরু খামারি মণা ঠাকুর বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার গো খাদ্যের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি তাই সব মিলে একটি গরুর পেছনে যে ব্যয় হয় তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, প্রতিবারই কোরবানির ঈদের সময় চোরাই পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ করে। যার ফলে দেশীয় খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আশা করছি এবারে তেমনটা হবে না। যার ফলে আমরা খামারিরা লাভবান হবো।
বিজিবি-৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির জিরো টলারেন্স থাকবে। এছাড়া আমাদের সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহে কাটা তারের বেড়া দেওয়া আছে। ইতিমধ্যে আমরা টহল টিম জোরদার করেছি। জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের সূত্রমতে জানা যায়, এবার কোরবানির ঈদের জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ভাবে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭ টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ১ লাখ ৬২৯টি, ছাগল রয়েছে ৭০ হাজার ১৩১ টি এবং ভেড়া রয়েছে ১০ হাজার ৯১৯টি। জেলায় গরু, ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা রয়েছে ১লাখ ২৯ হাজার ৯৫২টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৫২ হাজার ২১৫ টি। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় দুই লাখ কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা। খামারিরা যেন প্রাকৃতিক উপায়ে গরু লালন পালন করতে পারে সেই বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরেও দেশি গরু দ্বারা কোরবানি সম্পন্ন হবে আমরা এইবারেও বাইরে থেকে গরু আমদানি করছি না। জেলায় স্থানীয় ভাবে যে ১৭টি গরুর হাট রয়েছে সেখানে আমাদের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম থাকবে। আশা করছি আসন্ন কোরবানির ঈদে হাটে আগত ব্যবসায়ী ও খামারিরা নির্বিঘ্নে তাঁদের পশু বিক্রি করতে পারবে এবং খামারিরা লাভবান হবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top