All Menu

পদ্মা সেতু হওয়াতে সমস্ত বাঙালি আনন্দিত হলেও বিএনপি নেতারা খুশি হতে পারেনি

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, প্রতিবেশি ভারত, পাকিস্তান অভিনন্দন জানালেও দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিএনপি অভিনন্দন জানাতে পারেনি। অর্থাৎ পদ্মা সেতু হওয়াতে দেশ ও বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত বাঙালি, বাংলাদেশিরা আনন্দিত হলেও বিএনপি নেতারা খুশি হতে পারেনি এবং অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়ে তারা স্বীকার করে নিয়েছে যে, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করেছিল।’ ‘এরপরও এই পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী সবার জন্যই নির্মাণ করেছেন, যারা প্রশংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে তারাও এই সেতু ব্যবহার করবে’ বলেন মন্ত্রী। রবিবার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী এসময় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণটি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সারা দেশময় এবং সারা পৃথিবীময় সব মানুষের কাছে উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ফলাওভাবে প্রচার হয়েছে, জাতির সক্ষমতার ও গর্বের প্রতীক হিসেবে পদ্মা সেতুকে উপস্থাপন করা হয়েছে, এই গর্ব আমাদের সবার। সাংবাদিকবন্ধুরা প্রত্যেকটি টেলিভিশন এবং পত্রিকায় জুন মাসের শুরু থেকেই ধারাবাহিক প্রতিবেদন করেছেন এবং জাতির আবেগ-উচ্ছ্বাস গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এজন্য সমস্ত গণমাধ্যমকর্মীকে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘পদ্মা সেতু কখনোই হতো না যদি আমাদের একজন জননেত্রী শেখ হাসিনা না থাকতেন। কারণ সকল রক্তচক্ষু, ষড়যন্ত্র, প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সৎ সাহস বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনারই আছে। যারা একসময় পদ্মা সেতু নিয়ে সমালোচনা করেছিল, নিজস্ব অর্থায়নের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, তাদের অনেকেই আজ প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন এবং জাতির এই সক্ষমতায় তারাও আনন্দিত হয়েছেন। যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে অর্থায়ন প্রত্যাহার করেছিল, সেই বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়ে গিয়ে আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন।’এসময় জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘জাতিসংঘের আশিজন র‌্যাপোর্টিয়ারের মধ্যে একজন আইরিন খান যিনি আগে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য বিবৃতি দিয়েছিলেন, দেশে বিএনপি-জামাতের পেট্রোলবোমায় মানুষ হত্যার সময় নিশ্চুপ ছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করার সময় বিবৃতি দেন নাই, তিনি একচোখা নীতি নিয়ে কী বললেন সেটি গুরুত্বহীন।’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এবং অনেক সাংবাদিকও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আশ্রয় নিয়ে মামলা করেছেন এবং ফল পেয়েছেন উল্লেখ করে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘দেখতে হবে যাতে এই আইনের কোনো অপপ্রয়োগ না হয়। শুধু সাংবাদিক নয়, কেউই যেন অহেতুক নিগৃহীত বা হয়রানি না হয় সেটি নিশ্চিত করা অবশ্যই প্রয়োজন। সেটির সাথে আমি শতভাগ একমত। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার নজরে এলে আমি নিজে থেকে প্রোঅ্যাকটিভলি সমাধান করার চেষ্টা করি। এবং এখন আর আগের মতো কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা করা যায় না, সেজন্য অনুমতিরও প্রয়োজন হয়।’ ড. হাছান মাহ্‌মুদ এসময় বলেন, আইরিন খান যে দেশের বাসিন্দা, সেই ব্রিটেনে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে একটি-দু’টি নয়, কমপক্ষে আটটি আইন রয়েছে। ব্রিটেনের ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট ২০১৮, কমিউনিকেশন্স অ্যাক্ট ২০০৩, প্রাইভেসি এন্ড ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশন্স রেগুলেন্স ২০০৩, নেটওয়ার্ক এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম রেগুলেন্স ২০১৮, রেগুলেন অভ্ ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ারস অ্যাক্ট ২০০০, কমিউটার মিসইউজ অ্যাক্ট ১৯৯০, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯৮৯, ম্যালিশিয়াস কমিউনিকেশন্স অ্যাক্ট ১৯৮৮ এর কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় সেগুলো ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর এমনকি অস্ট্রেলিয়ার আইনেও রয়েছে। এর পর পরই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২৩তম সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ বিষয়ে মন্ত্রী জানান, এ বছর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে সাংবাদিকদের কল্যাণার্থে সাধারণ খাতে ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ছিল, তন্মধ্যে ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে, বাকি অর্থ বিতরণে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত করোনাকালীন বিশেষ সহায়তার ১০ কোটি টাকার তহবিলের প্রায় ৬ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে, আর ৪ কোটি টাকার সিংহভাগ আগামী কোরবানি ঈদের আগেই বিতরণ করার প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ মকবুল হোসেন এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, ডিইউজে’র সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাসস চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ কলিম সারোয়ার, দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top