রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকার ইতোমধ্যে কিছু দ্রব্যাদির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুরসহ রোজায় অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমদানিতে এলসি মার্জিন উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে রোজায় নিত্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। ঢাকা সম্প্রসারিত হলেও স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজার মাত্র এই দু’টি স্থানে ডিমের আড়ৎ রয়েছে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে রবিবার থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৬টি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৭টি সাব সেন্টারে সরাসরি ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রান্তিক খামারিরা কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মুরগীর বাচ্চা, ফিড এবং ভ্যাকসিনাদি গ্রহণের যে রীতি গড়ে উঠেছিল তা থেকে খামারিদের মুক্ত করে উৎপাদন ও বিপণন আরো সহজ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আশা করা যায় এর মাধ্যমে ভোক্তা ও খামারিরা উপকৃত হবে। জনগণের কল্যাণের জন্য জনগণের মালিকানাধীন রাষ্ট্রে জনগণের পক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার এখতিয়ার ও ক্ষমতা সরকারের আছে।
তাই সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে এতে শঙ্কায় পড়ার কোন কারণ নাই।
শনিবার (০৯নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি অয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সাধারণ মানুষ ভোট প্রদানের অধিকারের সাথে সাথে ভাতের অধিকারও নিশ্চিত করতে চায়। বিগত সরকার ভোট ও ভাত কোনটারই অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। মানুষ না পেরেছে ভোট দিতে, না পেরেছে দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকল থেকে বাঁচতে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর মানুষের অনেক আশা ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর শুল্ক কমানোর সিন্ধান্তে এনবিআরকে স্বাগত জানাই।
একই সাথে আশাকরি আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে চিনি, গম, ভোজ্যতেলসহ ৫/৬টি পণ্যের ওপর সরকার এলসি মার্জিন উঠিয়ে নেয়ার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয়। ৬/৭টি কর্পোরেট কোম্পানীর কাছে বন্দি আমরা। কর্পোরেট কোম্পানীগুলো যেন বোয়াল মাছ, গজার মাছের মতো। সবই খেয়ে ফেলতে চায়। ছোট বড় পণ্য থেকে শুরু করে মিডিয়া, সংবাদপত্র সবই তাদের নিয়ন্ত্রণে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে সব ব্যবসায়ীকে সমান সুযোগ প্রদান করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন পেশা ও সেক্টরে সিন্ডিকেট থাকলেও জনগণের কোন সিন্ডিকেট নেই। জনগণের সিন্ডিকেট জেগে উঠলে এসব কালো বাজারীরা পালিয়ে যাবে। যেভাবে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে জনগণ যখন জেগে উঠেছিল, তখন স্বৈরাচারের পতন হয়েছিল। তাই জনগণকে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। ভয়েস রেইস করতে হবে। তাহলে কালোবাজারী পতিত সরকারের মতো পালিয়ে যাবে। আমাদের আমদানী নীতিতে অনেক ভুল আছে। সঠিক সময়ে চাহিদা অনুযায়ী সঠিক পণ্য আমদানীতে ব্যাপক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।