বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে এ জাতির প্রতি এই উম্মার প্রতি পরীক্ষার পর পরীক্ষার মধ্য দিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশের অভিযাত্রা, নতুন দিগন্ত আল্লাহ তা’আলা সূচনা করেছেন। এবারের ৭ নভেম্বর আমরা এমন একটা পরিস্থিতিতে এমন একটা সময়ে উদযাপন করছি যখন আধিপত্যবাদ বিরোধী ছাত্র জনতা একটি গণবিপ্লব সংগঠিত করেছে। ৭ নভেম্বরের চেতনা ও ছাত্র জনতার ৫ই আগস্টের বিপ্লব এক সূত্রে গাঁথা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত ৭ই নভেম্বর ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (০৭নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের কার্যালয়ের হল রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলোয়ার হোসেন, মু. কামাল হোসাইন ও ড. মোহাম্মাদ আব্দুল মান্নান। আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম প্রমূখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে আধিপত্যবাদ ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সিপাহী জনতার সফল বিপ্লব সংঘটিত হয়। সেদিন নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবারের ধ্বনিতে ইসলামী মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। একদলীয় শাসনের পরিবর্তে এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। দেশে পতিত আওয়ামী গোষ্ঠী আবারো ক্ষমতায় এসে আইনের শাসন ভূলন্ঠিত করে, গণতন্ত্র নির্বাসিত করে দেয় ও মানবাধিকার বিপন্ন করে তোলে, ভোট ও ভাতের ন্যায্য অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করে। দীর্ঘ ১৫ বছরে গুম, খুন, ধর্ষণ মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করেছিল।
দেশের মানুষ গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারকে স্বমূলে উৎখাত করেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষকে পূর্ণভাবে মুক্ত করতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজন আরেকটি বিপ্লবের। যা এই জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করবে। ৭ই নভেম্বর একনায়কতন্ত্র, শোষন ও জুলুমের বিরুদ্ধে যেভাবে এদেশের মানুষ সম্মিলিতভাবে গর্জে উঠেছিল একইভাবে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতা সকল আধিপত্যবাদী শক্তির মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বরে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় অঙ্গিকার নিয়ে। ক্ষমতার অপব্যহার করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সংকুচিত করে, বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সহ জনগণের সকল মৌলিক অধিকার হরণ করেছিল মুজিব সরকার। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের চেতনা মূলত আধিপত্যবাদী ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে এক ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চেতনা। বিপ্লব-সংহতির মাধ্যমে ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বর আধিপত্যবাদকে পরাভূত করে দেশপ্রেমিক সিপাহী-জনতা বাংলাদেশকে রক্ষা করেছিল।
যেমনিভাবে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতা আবারো দেশকে রক্ষা করেছে। আমরা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশবাসীকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ জামায়াতের কাছে আমানত। দেশের জনগণকে রক্ষা করতে যদি রক্ত লাগে দেশের জন্য জীবন দিতে হয় আমরা প্রস্তুত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।