All Menu

সুখ-অসুখের ফাঁদে সামাজিক যোগাযোগ

ফেসবুকে আমার কোন আত্মপ্রচার দেখে যদি আপনার মধ্যে হিংসার জন্ম হয় কিংবা কোন অপ্রাপ্তির ক্ষত দগ্ধ হয় তবে আমাকে আনফ্রেন্ড করা উচিত। আপনি নিশ্চয়ই কিঞ্চিৎ ভালো থাকার জন্য ফেসবুকে সময় কাটান। সেখানে যদি কারো প্রকাশ-প্রচারে মন বিষিয়ে তোলে, ব্যথা দেয় তবে ভাবাভাবি ছাড়াই তাকে ছাড়িয়ে দেয়া উচিত। সেটা যে কাউকে।

বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা নিজেদের কল্যাণে ফেসবুক চালাই না। কারো প্রশংসা করতে, কারো কুচিন্তা ধারণ করতে এবং নিজেদের বাহারি বিজ্ঞাপনের জন্য এখানে সময় কাটাই! এখানে কাউকে কিছু দিলে কিছু মিলে! সুচিন্তা যে একেবারেই আসে না তাও নয় তবে তা অঙ্কে সামান্য, গুণেমানে সংকীর্ণ!

পাঁচহাজার বন্ধু তো দূর কী বাত মাত্র ৫০-১০০ বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখা, খোঁজ-খবর নেওয়া মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। বাস্তবজীবনে কেউ যদি একেবারেই নিষ্কর্মাও হয় তার পক্ষেও এ কাজ দুরুহ! কিছু কিছু বিখ্যাতজনদের খবরাদি অভাজনরা রাখেন বোধহয় তবে কতোটুকু প্রিয়জন হিসেবে আর কতোখানি প্রয়োজন হিসেবে সে হিসাব-নিকাষে এই প্রত্যূষে কাজ নাই!

আপনার মানসিক অশান্তি হয় তেমন কেউ ফেসবুকে থাকলে বিদায় করুন। শুধু ফেসবুকে কেন, এমন কেউ জীবনে থাকলেও তাকে তাড়ানো দরকার। আপনাকে জ্বালাতন করে, বিরক্ত করে এমন কাউকে প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্ন অবান্তর। আনফ্রেন্ড না করলেও অন্তত আনফলো করা আবশ্যক। কারো অর্থের ঝনঝনানি আর ক্ষমতার কড়কড়ানি দেখার জন্য ফেসবুক চালানোর চেয়ে হিরো আলমের গান দেখা উত্তম! এতে অন্তত রুচির কিঞ্চিৎ বিকৃতি হলেও মনের ওপর ধকল পড়ে না!

ফেসবুকে মানুষের আসল রূপ কতোখানি প্রকাশিত হয়? ৫-১০% এর বেশি? বোধহয় না! যা কিছু অতিরঞ্জন কেবল তাই কিংবা যা কিছুতে জনসাধারণের চেয়ে কিছুটা বেশি সে সবই তো আমরা ফেসবুকে প্রকাশ করি! এখানে পান্তা খাওয়ার চিত্র দেই না, চায়নিজ-চিকেন প্রচার করি! মোটাদাগে বলা চলে, এখানে আমি যা তা প্রচার করি না। যা কিছু মেকি, যা কিছু মুখোশ তাই কেবল প্রচার করি! অন্যকে দেখাতে গিয়ে নিজেকে উদলা করি!

আমার সুখকে অসুখে পরিনত করবে আর তাকে সাথে বয়ে বেড়াবো, লোভ বাড়াবো কিংবা ক্ষোভ দাগাবো- এমন বোকামি এই আলোতে ঠিক না। যারা মিথ্যা ছড়ায়, হিংসা বাড়ায় তাদেরকে বয়কট করতে পারলে স্বল্প পরিসরে হলেও কিছু কথা ও ব্যথা দুর হবে। মন প্রশান্তিতে থাকবে। টুকরো টুকরো সুখ অসুখ তাড়াতে পারে। জীবনে ভালো থাকার জন্য অনেক মানুষের দরকার নাই। এমন কিছু মানুষ থাকুক যারা ময়লা-আবর্জনার উর্ধ্বে।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
Fb.com/rajucolumnist/

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top