ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী ও সমস্যা সমাধানকারী জাতি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ফলে দেশের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা সাশ্রয়ী মূল্যের নির্ভরযোগ্য উচ্চগতির ইন্টারনেটসহ ডিভাইস ব্যবহার করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে। প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার (০৪ জুন ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর প্রোগ্রাম উইমেন ইন টেক, বাংলাদেশ-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা ফাইবার-অপটিক্যাল ক্যাবলের মাধ্যমে ২ হাজার ৬শতটি ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ কভার করেছি। ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে সবার জন্য সাশ্রয়ী করেছি। এর ফলে বাংলাদেশে ১৩০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। আমরা অংশীদারিত্বে বিশ্বাসী উল্লেখ করে পলক বলেন, আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সর্বদা আমাদেরকে বেসরকারি খাত, এনজিও এবং একাডেমিয়ার সাথে নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করেন। গত দেড় দশকে আমরা ২ হাজার ৫শতটি স্টার্ট-আপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। ইনোভেশন ডিজাইন এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমির অধীনে ৩৮৫টি স্টার্ট-আপকে প্রায় ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছি। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রযুক্তিতে নারীদের যুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্প দিয়েছেন। যার ফলে আমরা সারা দেশে ১০ হাজার ৫শত নারীকে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হয়েছি। ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের পর আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্প পেয়েছি। এই প্রকল্পের অধীনে, আমরা আইটি ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স, কল সেন্টার এজেন্ট এবং সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। প্রশিক্ষণের পর, আমরা এক মাসের মেন্টরশিপ দিচ্ছি। একজন উদ্যোক্তার জন্য শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ এবং তহবিল যথেষ্ট নয়, তাদের মেন্টরশিপ, কোচিং এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পলক আরও বলেন, আমরা আশা করবো আগামী বছর হুয়াওয়ে বাংলাদেশে তাদের ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ তৈরি করবে এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশে একটি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করবে। যেখানে আমাদের নারী প্রকৌশলীরা বিশেষ অবদান রাখবে। আগামী ১৭ বছর এখনকার মতোই চীন সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে সহায়তা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জারা জাবীন মাহবুব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর অফিস প্রধান ও প্রতিনিধি ড. সুজান ভাইজ, আইইউটি-এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও প্যান জুনফেং। অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। উল্লেখ্য, হুয়াওয়ের কৌশলগত সহযোগী হিসেবে প্রথম বারের মতো এই প্রতিযোগিতায় ছিলো ইউনেস্কো বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতায় ৭ শত ৫০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৮ জনকে বাছাই করা হয়। এই পর্যায়ে একক ও দলীয় – দুই রকম প্রতিযোগিতা ছিল। আইসিটি-কে কাজে লাগিয়ে কীভাবে নতুন সমাধান সম্ভব এবং এর ব্যবসায়িক সফলতার সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে দলভিত্তিক আইডিয়াগুলোকে নির্বাচিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।