All Menu

প্রবাসীর ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে দেড় মাস ধরে উধাও স্ত্রী

আশরাফুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক প্রবাসীর নগদ প্রায় ১০ লাখ টাকা, এক ভরি আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও আংটি নিয়ে পালিয়েছে তার স্ত্রী। এ ঘটনার পর অভিনব কায়দায় নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন ওই নারী। সদর উপজেলার অনুপ-নগর ইউনিয়নের চর বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত তরিকুল ইসলামের ছেলে প্রবাসী শরিফুল ইসলামের বাড়িতে গত ১০ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদালতে স্ত্রী জেসমিন খাতুনসহ শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন প্রবাসী শরিফুল ইসলাম। ঘটনায় দেড় মাস ধরে পাঁচ বছর বয়সী ছেলেসহ নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন জেসমিন খাতুন। প্রবাসী শরিফুল ইসলামকে জেসমিনের পরিবার জানিয়েছে, তাদের মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে। অথচ শরিফুল ইসলাম বিদেশে থাকাকালীন সময়ে স্ত্রী জেসমিনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো প্রায় ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন গত দেড় মাসে। এমনকি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর শরিফুলকে তালাক পাঠায় জেসমিন।
মামলার নথি, ভুক্তভোগী শরিফুল ও তার পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই প্রবাসে ছিলেন শরিফুল ইসলাম। এসময় স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই সকল টাকা পাঠিয়েছেন শরিফুল। সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন। স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে পাঠানো টাকা ফেরত চাইতে গেলে মনমালিন্য হয় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে। এরই সূত্র ধরে গত ১০ অক্টোবর টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে ছেলেসহ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় জেসমিন। ভুক্তভোগী প্রবাসী শরিফুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত কাজে শহরে গেছিলাম, বাসায় এসে দেখি আলমারি ভেঙে নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে স্ত্রী জেসমিন। পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে এবিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো নানারকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক-ভাবে থানায় একটি জিডি করি। পরবর্তীতে যোগাযোগ না করায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি। তিনি আরও বলেন, টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়ে উল্টো নিখোঁজ রয়েছে এমন নাটক সাজিয়েছে। অথচ নিখোঁজ থাকার পরেও ব্যাংক থেকে সব টাকা উত্তোলন করেছে। নিখোঁজ থাকার কথা বললেও আমাকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছে। আমার নগদ ও ব্যাংকে থাকা সব টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমনকি আমার ছোট্ট ছেলেটিকেও দেখতে দিচ্ছে না। আমি এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা চাই। শরিফুলের মা নাসিমা বেগম জানান, আমার বউমার সাথে কোন ধরনের বিরোধ ছিল না। ছেলে আসার পর ব্যাংকে জমা টাকা উঠাতে চাইলে মনমালিন্য হয়। এরপরই বাড়িতে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালায়। এরপর তাদের বাসায় একাধিকবার যোগাযোগ করলেও বউ ও নাতির সন্ধান চাইলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানায়। অথচ তাদেরকে একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। অনেক অনুরোধ করলেও ফিরিয়ে দেয়নি। উল্টো নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, জেসমিন ও তার ছেলেকে একাধিকবার দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায়। তারা নিজেদেরকে আড়ালে রাখতে ও টাকা আত্মসাৎ করতে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকছে। ছেলেটি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। আবার বিদেশে যাবে, কিন্তু টাকা নাই। এমনকি ছেলেটিও ফেরত দিচ্ছে না। জেসমিনের মা জাকিয়া বেগম ও বাবা আনারুল ইসলাম প্রথমে মেয়ে ও নাতির কথা জানি না বলে জানালেও পরে তারা বলেন, জামাইয়ের পরিবার একাধিকবার বাসায় এসে মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই তাদের থেকে আড়াল করতেই দূরে রেখেছি। এসময় টাকা আত্মসাৎ ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথা অস্বীকার করেন তারা। এবিষয়ে আদালতে দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা-ডিবি পুলিশ। জেলা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসগর আলী বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার নথিপত্র পাওয়া গেছে। তদন্ত-কাজ শুরু হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top