যারা নীরবে করে যায়, মুখ বুজে সয়ে যায় সব কথা ঘরে-বাইরে তাদের মূল্যায়ন কম। অবশ্য তারাও পাওয়ার জন্য করেও না কিন্তু চারপাশে অকৃতজ্ঞ মানুষকে গিজগিজ করতে দেখলে সাময়িক মন খারাপ হয়। তবে যারা পরার্থপর তাদেরকে কোন বাঁধা দমাতে পারে না। কোন বেড়া থামাতে পারে না। এরা বিনিময়ের ভাবনা ছাড়া করে যায়। কোন স্বীকৃতি ছাড়াই নীরবে বিপ্লব ঘটায়। তারা সংসারকে, সমাজকে আশা দেখায়!
অনেক করবেন কিন্তু নাম নাই অথচ কারো স্বার্থে একটু কম পড়লেই মুখর প্রতিবাদ উঠবে। আপনার পরিশ্রম, আপনার ত্যাগের মর্ম কর্ম দিয়ে শোধ করবে এখানে এমন আপন কম পাবেন। খুঁত ক্ষতিয়ে ঘা করে দেয়ার মত আত্মার আত্মীয়ের অন্ত নাই। নিন্দুকের নিন্দায় ক্ষান্ত নাই। তারপরেও রয়ে-সয়ে করে যেতে হবে। আপনার অনুপস্থিতিতে যে ছাপ থেকে যাবে সেটাই আপনি! অনুপস্থিতিতে কেউ যদি প্রশংসা করে, অবর্তমানে কেউ যদি অনুভব করে সেটাই মস্ত পাওয়া! কি হনুরেদের প্রতি মানুষের ঘৃণা ছাড়া আর কিছু থাকে না!
শত অকৃতজ্ঞতার মাঝেও, থামিয়ে দেয়া চাপের পরেও কাইজেন ঘটাতেই হবে। যে সমাজে আমার প্রজন্ম রেখে যাচ্ছি সেটাকে যাচ্ছেতাই হতে দেয়া যাবে না! সমাজ ধ্বংস হলে কোন সুরক্ষা-বলয় প্রলয় বন্ধ করতে পারবে না। জঞ্জাল উপড়ে ফেলার দায়িত্ব নিতে হবে! কে কি বললো, কে কি করলো নাকি না করলো সেটা ভেবে মুহূর্তকাল থেমে থাকা যাবে না। ছোট্ট ছোট্ট পরিবর্তনে বিপ্লব আসবে। ছোট্ট ছোট্ট উদ্যোগে নীতি-হীনতার রীতি শুধরে যাবে।
কারো দোষ ধরে বসে থাকলো পিছিয়ে যেতে হবে। আমার দায়িত্বটুকু ঠিকঠাক পালন করলে সভ্যতা একধাপ এগিয়ে যাবে। সমাজ এগিয়ে যাবে দশক। নিন্দার চিন্তায়, সমালোচনার আলোচনার ভয়ে থেমে থাকলে অন্ধকারের কাছাকাছি পিছিয়ে যাবে। যারা কাজ করে, যারা সমাজ নিয়ে ভাবে, যারা স্বার্থ-হীনভাবে সমাজকে নাড়ে তাদের সাথে সমাজের মেলবন্ধন শক্ত হবে। পোক্ত আগামীর জন্য কাজ করতে হবে। ভাবতে হবে এবং নীতি-হীন দুর্নীতি দূর করতে উঠেপড়ে লাগতে হবে।
ভালো না বাসলে ক্ষতি নাই কিন্তু যে ভালোবাসে তাকে থামিয়ে দেয়া ঠিক নয়। যে কাজ করতে চায়, কাজ করতে জানে তাকে উৎসাহ দিতে হবে। সবার দ্বারা সব কাজ সুচারুরূপে হয় না। কাজেই পেশার স্বীকৃতি ও সামাজিক মর্যাদা দিয়ে সবাইকে সম্মানিত করতে হবে। ময়লা পরিষ্কারকদের অনুপস্থিত জীবনযাত্রাকে কতভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে সেটা তাদের নিষ্ক্রিয়তার কালে অনুভূত হয়।
আপনাকে নড়িয়ে দিবে, আপনাকে দমিয়ে দিবে, আপনাকে থামিয়ে দিবে কিন্তু আপনাকে উতরে যেতেই হবে। জীবনে নির্ধারিত গোল রাখা এবং লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করার মাঝেই সাফল্যের সিংহভাগ সঞ্চিত। কাজেই কে কি বললো, কে হাসলো, কে বাসলো না ভালো-এসব ভেবে থেমে গেলে জীবন থেমে যাবে। শুয়ে পড়বে ইচ্ছা। প্রশংসায় কর্ম-স্পৃহা বাড়ে! কাজের কাজীদের যেন থামিয়ে না দেই!
রাজু আহমেদ।
কলামিস্ট।
[email protected]
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।